সান নিউজ ডেস্ক: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে ৩৬ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছেন।
আরও পড়ুন: ক্ষেপণাস্ত্র সজ্জিত যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন
ইউক্রেনে যুদ্ধরত রুশ বাহিনীর উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবার এক লিখিত আদেশে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেছেন, আগামী শুক্র ও শনিবার (৬ ও ৭ জানুয়ারি) যেন রুশ সেনারা যুদ্ধ থেকে বিরত থাকেন।
সেই সঙ্গে ইউক্রেনকেও যুদ্ধবিরতি পালনের আহ্বান জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। বিশ্বজুড়ে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে ৩টি ধারা রয়েছে-রোমান ক্যাথলিক, প্রোটেস্টান্ট এবং অর্থোডক্স। রাশিয়ায় অর্থোডক্সপন্থী খ্রিস্টানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। ইউক্রেনেও বিপুলসংখ্যক অর্থোডক্সপন্থী আছেন।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের ৭০ ভাড়াটে সেনা নিহত
রোমান ক্যাথলিকদের শীর্ষ ধর্মগুরুর পদবি ‘পোপ’, আর রাশিয়াসহ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা অর্থোডক্সপন্থীদের শীর্ষ ধর্মগুরুর পদবি ‘প্যাট্রিয়ার্ক’। রোমান ক্যাথলিক ও প্রোটেস্টান্টপন্থীরা ২৫ ডিসেম্বর তাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বড়দিন পালন করলেও অর্থোডক্সপন্থীরা তাদের বড়দিন পালন করেন ৬ ও ৭ জানুয়ারি।
বর্তমানে অর্থডক্সপন্থীদের প্রধান ধর্মগুরু হলেন প্যাট্রিয়ার্ক কিরিল অব মস্কো; একই সঙ্গে রাশিয়ার সব অর্থোডক্স গির্জার শীর্ষ নির্বাহীও তিনি। বৃহস্পতিবার এক লিখিত বার্তায় তিনি অর্থোডক্স বড়দিন উপলক্ষে রাশিয়া ও ইউক্রেনকে ৬ ও ৭ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান।
প্যাট্রিয়ার্ক এই আহ্বান জানানোর পর অল্প সময়ের মধ্যে তাতে সাড়া দিয়ে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন পুতিন।
আরও পড়ুন: যুদ্ধের অবসান চায় রাশিয়া
লিখিত আদেশে তিনি বলেন, মহামান্য প্যাট্রিয়ার্ক কিরিলের আহ্বানকে সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন করে আমি রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিচ্ছি বড়দিন উপলক্ষে ৬ জানুয়ারি রাত ১২ টা থেকে ৭ জানুয়ারি রাত ২৪টা (৮ জানুয়ারি রাত ১২টা) পর্যন্ত যেন ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি মেনে চলা হয়।
ইউক্রেনের যেসব এলাকায় এখন যুদ্ধ চলছে— সেসব স্থানে বিপুলসংখ্যক অর্থোডক্স খ্রিস্টান বসবাস করেন। আমি ইউক্রেনের প্রতিও ৬ এবং ৭ তারিখ যুদ্ধবিরতি পালনের এবং জনগণকে বড়দিন উৎসব পালনে যাবতীয় সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানাচ্ছি।
আরও পড়ুন: ২০২৩ সাল হবে খুব কঠিন
প্রসঙ্গত, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি বিদ্রোহীদের দুই রাষ্ট্র ‘দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক’ ও ‘লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক’কে স্বীকৃতি দিয়ে শান্তি রক্ষায় ওই অঞ্চলে সেনাবাহিনী পাঠায় রাশিয়া।
পরে ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশপন্থী বিদ্রোহীদের সহায়তার লক্ষ্যে মস্কো স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীকে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার অভিযানের নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্বব্যাপী নিত্য পণ্যের দাম বেড়ে যায় যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে জার্মানিসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকেই পাল্টে যেতে শুরু করে জার্মানিসহ পশ্চিমা দেশগুলোর অর্থনীতির চেহারা। নিষেধাজ্ঞার বিপরীতে রাশিয়া থেকে জ্বালানি, ভোজ্য তেল, গ্যাস ও কয়লাসহ খাদ্যশস্যের আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। বিভিন্ন দেশে দেখা দিয়েছে মূল্যস্ফীতি। ৬ মাসের বেশি সময় ধরে চলছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ।
সান নিউজ/এনকে