ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছিলেন শনিবারের (১ আগস্ট) মধ্যেই চীনা ভিডিও-অ্যাপ টিকটককে আমেরিকায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করার নির্দেশ দেবেন তিনি। তবে রোববার (২ আগস্ট) পর্যন্ত এ নিয়ে সই-সাবুদ করেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু তার হুঁশিয়ারির জেরে সম্ভবত বানচাল হতে চলেছে মাইক্রোসফটের যাবতীয় পরিকল্পনা।
সোমবারের (৩ আগস্ট) মধ্যে টিকটকের আমেরিকা শাখা কিনে নেওয়ার কথা ছিল বিল গেটসের তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাটির। একটি প্রথম সারির মার্কিন দৈনিক অন্তত তেমনটাই দাবি করেছিল। এ নিয়ে কথাবার্তা প্রায় পাকাই হয়ে গিয়েছিল এক রকম। কিন্তু গত শুক্রবার (৩১ জুলাই) মার্কিন প্রেসিডেন্ট টিকটক নিষিদ্ধ করার যে হুমকি দেন, তার ফলেই মাইক্রোসফট নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসতে পারে বলে জানিয়েছে ওই দৈনিকটিই।
গোটা দুনিয়ায় প্রবল জনপ্রিয় এই ভিডিও-অ্যাপটি ব্যবহারকারীদের না-জানিয়ে তাদের তথ্য চুরি করছে বলে কয়েক দিন ধরেই দাবি করে আসছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব মাইক পম্পেয়ো। একই অভিযোগ তুলে গত শুক্রবার ট্রাম্প ঘোষণা করেন, তিনি অবিলম্বে টিকটক নিষিদ্ধ করতে চলেছেন গোটা দেশে।
মার্কিন প্রশাসনের এই অভিযোগ বরাবর খারিজ করে এসেছে টিকটকের মূল সংস্থা বাইটড্যান্স। টিকটকের আমেরিকা শাখার জেনারেল ম্যানেজার ভ্যানিসা পাপ্পাসও তথ্য চুরির অভিযোগ মানতে চাননি। বরং এত দিন যে সব মার্কিন নাগরিক তাদের অ্যাপ ব্যবহার করেছেন,
একটি বার্তায় তাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। ভ্যানিসা আরও জানিয়েছেন, আগামী তিন বছরে আমেরিকায় ১০ হাজার নতুন কর্মসংস্থানের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের সংস্থার। যে দেড় হাজার মার্কিন নাগরিক তাদের সংস্থায় কাজ করেন, তাদের জন্য ভ্যানিসা গর্বিত বলে জানিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গেই তার বক্তব্য, ‘‘আমরা আমেরিকা ছেড়ে কোথাও যাচ্ছি না।’’
তথ্য চুরির অভিযোগে কোনও সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা উচিত নয় বলে ট্রাম্পকে আক্রমণও করেছেন অনেকে। আমেরিকায় সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত আইনজীবী জেনিফার গ্র্যানিক যেমন মনে করেন, যে কোনও অ্যাপই ব্যবহারকারীদের তথ্য হাতাচ্ছে কি না, সে বিষয়ে অবশ্যই নজর রাখা উচিত। তবে এ ভাবে কোনও জনপ্রিয় অ্যাপকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা বাক্ স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়ারই শামিল বলে মনে করেন জেনিফার।
গোটা দুনিয়ায় ১০০ কোটির কাছাকাছি মানুষ টিকটকে ভিডিও শেয়ার করেন। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যঙ্গ-বিদ্রুপও শুরু হয়েছে। এক মার্কিন তরুণী যেমন নিজের মুখে ইট আর কমলা রং লাগানোর একটি ভিডিও বানিয়ে লিখেছেন, ‘টিকটক রেখে দেওয়ার জন্য ট্রাম্পকে বোঝানোর চেষ্টায় আমি।’
ইটের মাধ্যমে মেক্সিকো সীমান্তের দেওয়াল এবং কমলা রঙের মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের গায়ের চামড়াকে ব্যঙ্গ করেছেন ওই তরুণী। তিন লক্ষেরও বেশি মানুষ সেই ভিডিও দেখে ফেলেছেন ইতিমধ্যে।
তবে এই পরিস্থিতিতে নিজেদের ব্যবসা হংকং বা সাংহাইয়ের মতো শহরে নথিভুক্ত করাতে চাইছে টিকটক। সংস্থার বেশ কিছু কর্মকর্তার বক্তব্য, এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে তারা সাংহাইয়ের বদলে হংকংকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।
সান নিউজ/ এআর