আন্তর্জাতিক ডেস্ক : লাতিন আমেরিকার দেশ পেরুর প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাসিলোকে দেশটির আইনপ্রণেতারা অভিসংশনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করেছে। এর ঠিক পরপরই পুলিশ ‘অভ্যুত্থান চেষ্টার’ অভিযোগে সদ্যই ক্ষমতা হারানো প্রেসিডেন্টকে আটক করেছে।
আরও পড়ুন : বর্ষসেরা ব্যক্তি’ জেলেনস্কি
বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
পেদ্রো কাসিলোকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ভাইস-প্রেসিডেন্ট দিনা বোলোয়ার্তে।
পেরুর ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন দিনা। ২০২৬ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।
আরও পড়ুন : দোষী সাব্যস্ত ট্রাম্পের কোম্পানি
দেশটির সংসদের আইনপ্রণেতারা সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাসিলোর বিরুদ্ধে আগেই অভিসংশনের প্রস্তাব দেন। এ নিয়ে বুধবার ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নিজেকে রক্ষা করতে পেদ্রো সংসদ ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা চালান।
এদিকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে ডিক্রি জারি করে দেশ শাসনের কথা বলেন তিনি। টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে জানান, অস্থায়ীভাবে সংসদ ভেঙে দেবেন, ডিক্রির মাধ্যমে শাসনভার পরিচালনা এবং দেশে নতুন নির্বাচন আয়োজন করবেন।
অপর দিকে তার এ ঘোষণাকে সুস্পষ্ট অভ্যুত্থান হিসেবে উল্লেখ করেন তার নিজ দল ও বিরোধী দলের সদস্যরা। এর কয়েকদিন আগে দেশটির বিচারবিভাগ ঢেলে সাজানোর ঘোষণা দেন পেদ্রো।
আরও পড়ুন : ইউক্রেনে রুশ হামলায় নিহত ৪
যারা তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগুলো তদন্ত করছিল। তার এসব সিদ্ধান্তে ক্ষুদ্ধ হন মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা। তারা একে একে পদত্যাগ করতে থাকেন।
কিন্তু এসব করেও শেষ রক্ষা হয়নি পেদ্রোর। উল্টো ‘সংবিধান পরিপন্থি অভ্যুত্থান চেষ্টায়’ ফেঁসে গেছেন তিনি। এ কারণে ক্ষমতা হারানোর পরপরই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন পেদ্রো। এমনটি জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
এমন নাটকীয় বিদায়ের মাধ্যমে পেদ্রোর ১৭ মাসের শাসনের অবসান হয়েছে। তার সময়টায় পেরুর রাজনৈতিক পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত ছিল। এই ১৭ মাসের মধ্যে পাঁচবার মন্ত্রিসভা গঠন ও পরিবর্তন করেছেন তিনি। এতে করে ৮০ জন মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন : আফগানিস্তানে বিস্ফোরণে নিহত ৭
এছাড়া এ সময়ের মধ্যে তার বিরুদ্ধে দুইবার অভিসংশন এবং ছয়বার তদন্ত করার চেষ্টা করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাসিলো যখন সংসদ ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন তখন পুলিশ ও সেনাবাহিনীর পরিস্কারভাবে জানিয়ে দেয়, প্রেসিডেন্টের এসব কার্যক্রমকে সমর্থন করবে না তারা।
এরপরই দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে জর্জরিত পেদ্রোর পতন অত্যাসন্ন হয়ে পড়ে বলে প্রতিবেদনে জানান বার্তাসংস্থা রয়টার্স ও দ্য গার্ডিয়ান।
সান নিউজ/এইচএন