সান নিউজ ডেস্ক: ইউরোপের দেশ ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন ও ব্রিটেনে এবারের গ্রীষ্মকালে তীব্র গরমে অতিরিক্ত ২০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: শপিংমলে বন্দুক হামলা, নিহত ৪
বৃহস্পতিবার ( ২৪ নভেম্বর) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। রয়টার্স’র এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে
২০২২ সালে প্যারিস থেকে লন্ডন পর্যন্ত তাপমাত্রা প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তারও বেশি ছিল। ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন গ্রুপের জলবায়ু বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ছাড়া এ ধরনের উচ্চ তাপমাত্রা ‘কার্যত অসম্ভব’।
আরও পড়ুন: আনোয়ার ইব্রাহিমকে প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন
জানা যাচ্ছে, উচ্চ তাপমাত্রা মৃত্যুর একটি বড় কারণ। অতিরিক্ত গরমে মানুষের হিটস্ট্রোক হতে পারে, ফলে মস্তিষ্ক, কিডনি ও শরীরের অন্যান্য অঙ্গের ক্ষতি হতে পারে। অতিরিক্ত তাপপ্রবাহ শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা বা হৃদরোগের মতো অবস্থাকে আরও জটিল করে তোলে।
ইউরোপে ২০০৩ সালের তাপপ্রবাহ, মহাদেশজুড়ে প্রায় ৭০ হাজার মানুষের মৃত্যুতে প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে ফ্রান্সে এই সংখ্যা ছিল বেশি। ফলে অনেক দেশ প্রাথমিক সতর্কীকরণ ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্কুল খোলার মতো ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করে।
অস্ট্রিয়ার গ্রাজ ইউনিভার্সিটির হিটওয়েভ গবেষক ক্লোই ব্রিমিকম্ব বলেন, এসব কর্ম পরিকল্পনা ২০২২ সালে তাপপ্রবাহের প্রভাব কিছুটা কমিয়ে দিতে পারে, তবে মৃতের সংখ্যা এখনও বেশি। তিনি আরও বলেন, ২০০৩ সালের পর এটি সবচেয়ে বেশি তাপপ্রবাহের বছর।
আরও পড়ুন: বাড়ছে বিদ্যুতের দাম
মৃত্যু সনদে স্পষ্টভাবে ‘তাপ’ উল্লেখ না করলে তা মৃত্যুর নির্দিষ্ট কারণ কিনা তা অবিলম্বে জানার খুব কম উপায় রয়েছে। তবে পরিসংখ্যানবিদরা একটি অনুমান করার জন্য অতিরিক্ত সূত্র ব্যবহার করেন। সেই সূত্র হচ্ছে, ঘটে যাওয়া মৃত্যুর সংখ্যা ও ঐতিহাসিক প্রবণতার ওপর ভিত্তি করে প্রত্যাশিত সংখ্যার মধ্যে যে পার্থক্য তা বের করা। এটিকে ‘হার্ভেস্টিং ইফেক্ট’[মৃত্যুহার স্থানচ্যুতি এমন একটি ঘটনা যেখানে অতিরিক্ত মৃত্যুর সময়কাল (অর্থাৎ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মৃত্যু) ও মৃত্যু কম হওয়ার সময়কাল (অর্থাৎ স্বাভাবিকের চেয়ে কম মৃত্যু) নির্দেশ করে] ও বলা হয়। এটি মূলত পরিবেশগত ঘটনা যেমন তাপমাত্রা, ঠাণ্ডা আবহাওয়া, মহামারি, দুর্ভিক্ষ বা যুদ্ধের কারণে ঘটে থাকে।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা চলতি মাসে জানায়, ইউরোপ গত তিন দশকে বাকি বিশ্বের তুলনায় দ্বিগুণ বেশি উষ্ণতা ছিল। অপরদিকে, কোপার্নিকাস জলবায়ু পরিবর্তন সার্ভিস বলছে, ২০২২ সালে রেকর্ড পরিমাণে উষ্ণতা ছিল গ্রীষ্মকালে।
আরও পড়ুন: শুক্রবার কখন কোথায় লোডশেডিং
পশ্চিম ইউরোপের মধ্যে ফ্রান্সে এবার অতিরিক্ত মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় অর্ধেক, মোট ১০ হাজার ৪২০জন। ব্রিটেনের পরিসংখ্যান অফিস বলছে, ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে গ্রীষ্মকালে এবার অতিরিক্ত ৩ হাজার ২৭১ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্পেনে গত জুন ও আগস্টের মধ্যে অতিরিক্ত মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ৬৫৫ জনের। জার্মানির স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্থা বলছে, দেশটিতে সাড়ে ৪ হাজার অতিরিক্ত মৃত্যু হয়েছে অতি গরমে।
সান নিউজ/এনকে