সান নিউজ ডেস্ক : পাকিস্তানের চলমান অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে ৯০০ কোটি মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে চীন।
আরও পড়ুন : জনসংখ্যা হবে ৮০০ কোটি!
সোমবার (৭ নভেম্বর) চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এ সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন বলে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ইন্ডিয়া টুডে।
গত সপ্তাহে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের চীন সফরের সময়ই এ ব্যাপারে ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল।
পাকিস্তানের জন্য ৯০০ কোটি ডলার সাহায্যের ঘোষণা করে জিনপিং জানালেন, পাকিস্তানকে আর্থিক সংকট থেকে মুক্ত করতে সর্বাত্মকভাবে সাহায্য করবে চীন।
আরও পড়ুন : মারা গেলেন স্বাধীন ভারতের প্রথম ভোটার
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ন সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন, পাকিস্তান আমাদের পুরনো বন্ধু। তাদের আর্থিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে আমরা সম্ভাব্য সমস্ত চেষ্টা করব।
পাকিস্তানের রাজনীতিতে সাম্প্রতিক উত্তেজনা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ওপর গুলি চালানোর ঘটনা নিয়ে কোনো মন্তব্য না করে ঝাও লিজিয়ন বলেন, আমরা তার (ইমরান) দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) দেশটির পূর্বাঞ্চলে একটি লংমার্চে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় ইমরান খানের গাড়িবহরে গুলি চালানো হয়। এসময় পায়ে গুলিবিদ্ধ হন পিটিআই প্রধান। তবে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক নয় বলে সে সময় জানিয়েছিল দেশটির গণমাধ্যমগুলো।
আরও পড়ুন : ইমরানের ওপর হামলা সাজানো নাটক
ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী পাকিস্তানি নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী রয়টার্সকে বলেন, ‘এটি স্পষ্ট হত্যাচেষ্টা ছিল। খানকে আঘাত করা হয়েছিল কিন্তু তিনি স্থিতিশীল রয়েছেন। তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে।
ফাওয়াদ চৌধুরী আরও বলেন, ‘সেখানকার লোকজন যদি শুটারকে থামিয়ে না দিতো, তাহলে পিটিআই নেতা নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতেন’।
ইসলামাবাদ অভিমুখে পিটিআই’র লংমার্চের সপ্তম দিনে গুজরানওয়ালার আল্লাহওয়ালা চকে ইমরান খানকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। হামলায় তিনি ছাড়া আরও অন্তত ৭ জন পিটিআই নেতা আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে ফয়সাল জাভেদও রয়েছেন।
আরও পড়ুন : প্লেন বিধ্বস্তে নিহত বেড়ে ১৯
প্রসঙ্গত, আগাম নির্বাচনের দাবিতে ‘হাকিকি আজাদি’ আন্দোলন শুরু করেছে ইমরান খানের দল পিটিআই। গত ২৮ অক্টোবর থেকে লাহোর থেকে রাজধানী ইসলামাবাদের উদ্দেশে লংমার্চ শুরু হয়। লাখো সমর্থক নিয়ে শুরু হওয়া লংমার্চের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ‘কাপ্তান’ ইমরান খান।
লাহোর থেকে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) লংমার্চ শুরু করেছেন গত ২৮ অক্টোবর থেকে। এই লংমার্চ রাজধানী ইসলামাবাদের দিকে আগাচ্ছে। লংমার্চ আজ সোমবার পাঞ্জাবের গুজরানওয়ালায় পৌঁছানোর কথা।
চলমান এই লংমার্চে পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশের পিটিআইয়ের নেতা-কর্মীরা যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন : বিশ্বজুড়ে মিথ্যা ছড়াচ্ছে টুইটার
‘চীন-পাকিস্তান সম্পর্কের মূলে রয়েছে যুদ্ধের ইতিহাস’
চলতি বছরের শুরুতে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (এমইএ) সাবেক সচিব পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বলেছিলেন, চীন ও পাকিস্তানের রাজনৈতিক সম্বন্ধ শুরু হয়েছিল ১৯৬২ সালের যুদ্ধের পর, যখন এই দুই দেশই ভারতকে তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করতে শুরু করে।
দেশটির সংবাদ সংস্থা এএনআই স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানায়।
পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, আমরা সবাই জানি, পাকিস্তান তার নিজের জন্ম নিয়েও কিছু প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি করেছিল, যা ছিল তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
আরও পড়ুন : টুইটার থেকে ৩ হাজার ৭০০ কর্মী ছাঁটাই
‘আজ, এটি আরও শক্তিশালী এই কারণে যে পাকিস্তান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন হারিয়েছে। আরব সাগর থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত পৌঁছানোর জন্য চীনের নিজস্ব কৌশলগত কিছু প্রয়োজনীয়তা রয়েছে যাকে আমরা বলি মালাক্কা ডাইলেমা, কারণ এর অর্থনীতি বেড়েছে। এটা অনেক বেশি স্বাধীন হয়েছে। এটিই যে ভূ-রাজনৈতিক এবং ভূ-অর্থনীতির কারণে তারা কাছাকাছি এসেছে’, যোগ করেন পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী।
পিনাক রঞ্জন বলেন, আমি মনে করি চীন-পাকিস্তানের প্রবেশাধিকার ১৯৬২ সালের যুদ্ধের পরে শুরু হয়েছিল, যখন উভয় পক্ষই অনুভব করেছিল যে ভারতকে শত্রু হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। পাকিস্তান যেকোনো ক্ষেত্রেই বৈরী ছিল। অনির্ধারিত সীমান্তের বিভিন্ন বিষয় পরিষ্কার হওয়ায় চীনও শত্রু হয়ে উঠেছে। গত ৪-৫ দশকে চীন ও পাকিস্তান একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে যা তাদের কাছাকাছি নিয়ে এসেছে।
আরও পড়ুন : রাজধানী দিল্লির সব প্রাথমিক স্কুল বন্ধ
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক এই সচিব আরও বলেন, ভারত শত্রুদেশ দ্বারা বেষ্টিত, সেটি এমন যে পরিবেষ্টিত শব্দটি সম্ভবত এ ক্ষেত্রে সঠিক শব্দ নয়।
পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, ‘আমাদের পশ্চিমে এবং উত্তরে চীন ও পাকিস্তান অবশ্যই শত্রু হিসেবে রয়েছে। কিন্তু ডাইলেমা অনুযায়ী আবারও চীন ও ভারতের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে, কিন্তু সবার মধ্যে বাণিজ্য চলছে।
তিনি বলেন, যা ঘটছে এটি অবশ্যই একটি ভূ-রাজনৈতিক খেলা, যা চীন এবং পাকিস্তান খেলছে। তবে এর পেছনে রয়েছেন প্রধানত চীন, কারণ পাকিস্তানের কাছে এটি করার জন্য আর্থিক শক্তি নেই।
পাকিস্তানের উগ্র মৌলবাদী ইসলামিক নেটওয়ার্ক আছে। এদেরকে পাকিস্তান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে যেখানে চীন কূটনৈতিক ফাঁদ হিসেবে আর্থিক এবং অন্যান্য সাহায্যের মাধ্যমে তার শক্তি বাড়ানোর চেষ্টা করছে।
সান নিউজ/এইচএন