আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পশ্চিম আফ্রিকান দেশ গিনির পশ্চিমাঞ্চলে রোববার ট্রাক-বাসের সংঘর্ষে ২৪ জনেরও বেশি নিহত হয়েছে। এদের বেশির ভাগই স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বাসটি অপর একটি গাড়িকে অতিক্রম করতে গেলে এ মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন : মারা গেলেন স্বাধীন ভারতের প্রথম ভোটার
এএফপি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বাসটি রাজধানী কোনাক্রি থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমের ফরানাহতে যাচ্ছিল। রাজধানীর প্রায় ১৩০ কিলোমিটার (৮০ মাইল) পূর্বে গিনির চতুর্থ বৃহত্তম নগরী কিন্দিয়ার কাছে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
এ বাস দুর্ঘটনায় ২৪ জনেরও বেশি নিহত ও আরও অনেক মানুষ আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার।
এএফপি’কে স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা কবিনেত ককা বলেন, নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই শিক্ষার্থী। বাসটি অপর একটি বাসকে অতিক্রম করার চেষ্টা করলে ওই ট্রাকের সাথে সংঘর্ষ হয়।
আরও পড়ুন : প্লেন বিধ্বস্তে নিহত বেড়ে ১৯
ফরাসি সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ফৌলি সুমাহ জানান, ‘মরদেহগুলো কোনোমতে শনাক্ত করা গেছে।’
প্রসঙ্গত, দুর্বল সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং লক্কড়-ঝক্কড় যানবাহন বা বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে গিনিতে প্রায়ই ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। দেশটিতে গত সেপ্টেম্বরে বাস দুর্ঘটনায় ১৫ জন প্রাণ হারায় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বাসস।
আফ্রিকার পশ্চিম অংশে গিনি উপসাগরের উপকূলবর্তী অঞ্চলের ঐতিহাসিক নাম গিনি (ইংরেজি: Guinea)। এটি উত্তরে সাহিল পর্যন্ত বিস্তৃত।
আরও পড়ুন : বিশ্বজুড়ে মিথ্যা ছড়াচ্ছে টুইটার
ঐতিহাসিকভাবে সাহারা-নিম্ন আফ্রিকার এই অঞ্চলটিই ইউরোপীয়দের সাথে প্রথম বাণিজ্য শুরু করে। হাতির দাঁত, সোনা এবং ক্রীতদাস বেচে অঞ্চলটি ধনী হয়ে ওঠে, এবং ১৮শ ও ১৯শ শতকে এখানে অনেকগুলি রাজ্য গড়ে ওঠে।
এই রাজ্যগুলি সহিলের বিশাল রাজ্যগুলির চেয়ে আকারে ছোট হলেও এগুলিতে জনবসতির ঘনত্ব ছিল অনেক বেশি এবং অনেক বেশি কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত ও প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত ছিল।
আরও পড়ুন : টুইটার থেকে ৩ হাজার ৭০০ কর্মী ছাঁটাই
এই রাজ্যগুলির উপস্থিতির কারণে আফ্রিকার অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে এখানে উপনিবেশবাদী ইউরোপীয়রা বেশি বাধার সম্মুখীন হয়। এ কারণে ১৯শ শতকের একেবারে শেষে এসে অঞ্চলটি ইউরোপীয়দের করায়ত্ত হয়।
গিনি নামটি বার্বার ভাষার "aginaw" শব্দটি থেকে পর্তুগিজ হয়ে বিভিন্ন ইউরোপীয় ভাষায় প্রবেশ করেছে। এটির আদি অর্থ ছিল "কালো", অর্থাৎ "কৃষ্ণাঙ্গদের দেশ"।
গিনি অঞ্চলকে অনেক সময় নিম্ন গিনি এবং ঊর্ধ্ব গিনি --- এই দুই অঞ্চলে ভাগ করা হয়। নিম্ন গিনি অঞ্চলটি আফ্রিকার সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ব একটি অঞ্চল। এটি দক্ষিণ নাইজেরিয়া, বেনিন, টোগো এবং ঘানা নিয়ে গঠিত।
অপরদিকে ঊর্ধ্ব গিনি অঞ্চলটি অনেক কম জনঅধ্যুষিত; এটি কোত দিভোয়ার থেকে গিনি বিসাউ পর্যন্ত বিস্তৃত।
আরও পড়ুন : রাজধানী দিল্লির সব প্রাথমিক স্কুল বন্ধ
ইউরোপীয় বণিকেরা গিনি অঞ্চলটিকে রফতানিকৃত দ্রব্যের উপর ভিত্তি করে কয়েকটি ভাগে ভাগ করেছিল। বেনিন ও নাইজেরিয়ার পূর্ব অংশটির নাম দেয়া হয়েছিল ক্রীতদাস উপকূল (Slave Coast), বর্তমান ঘানা অঞ্চলটির নাম দেওয়া হয়েছিল স্বর্ণ উপকূল (Gold Coast)।
আর এর পশ্চিমে ছিল হাতির দাঁতের উপকূল (Ivory Coast)। এরও পশ্চিমে বর্তমান লাইবেরিয়া ও সিয়েরা লিওন অঞ্চলটি পরিচিত ছিল মরিচ উপকূল (Pepper Coast) বা শস্য উপকূল (Grain Coast) নামে।
সান নিউজ/এইচএন