সান নিউজ ডেস্ক: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, তার দল পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করতে চায় এবং তার গঠনমূলক সমালোচনার লক্ষ্য শক্তিশালী এই বাহিনীর ক্ষতি করা নয়। সোমবার (৩১ অক্টোবর) ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআই’র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: বদলে গেল অফিসের সময়সূচি
রোববার (৩০ অক্টোবর) নিজের সমর্থকদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ইমরান খান বলেন, অতীতে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে তার সমালোচনামূলক বক্তব্যগুলো ছিল গঠনমূলক। ইমরানের ভাষায়, ‘আমি চাই সেনাবাহিনী শক্তিশালী হোক। আমাদের একটি শক্তিশালী সেনাবাহিনী দরকার। আমার গঠনমূলক সমালোচনা তাদের ক্ষতি করার (উদ্দেশ্যে) নয়।’
পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী এদিন স্পষ্ট করে দেন যে, তার বক্তব্যকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। মূলত সেনাবাহিনী নিয়ে সমালোচনামূলক বক্তব্যের জন্য ইমরান দিন দু’য়েক আগে শেহবাজ শরিফের সরকারের সমালোচনার শিকার হন তিনি। আর সেই খবর পাকিস্তান ও ভারতের সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হয় এবং এরপরই রোববার নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন তিনি।
আরও পড়ুন: বেড়েই চলছে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা
ইমরানের সাম্প্রতিক বিভিন্ন বক্তব্যের জবাবে পাকিস্তানের প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর ডিজি লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাদিম আঞ্জুম গত সপ্তাহে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে বেশ কিছু গোপন তথ্য প্রকাশ্যে আসে।
পিটিআই বলছে, গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাদিম আঞ্জুমের সংবাদ সম্মেলনের পরে প্রতিবেশী দেশে (ভারতে) উদযাপন শুরু হয় উল্লেখ করে রোববার ইমরান বলেন, ‘ভারত (আমার কথার) ভুল বুঝবে না, আমরা আমাদের সেনাবাহিনীর সাথে আছি।’
আরও পড়ুন: পুলিশের ২ কর্মকর্তাকে অবসরে পাঠালো সরকার
সেনাবাহিনী ও ইমরান খান মুখোমুখি অবস্থান করছে; এমন ভাবনায় ভারতের আনন্দিত হওয়ার বিষয়ে পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি ভারতকে বলতে চাই- এই সেনাবাহিনী আমাদের এবং আমি কখনোই এর বিরুদ্ধে যেতে পারি না।
লংমার্চে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীরা আগামী ৪ নভেম্বর ইসলামাবাদে পৌঁছানোর পরিকল্পনা করছেন এবং পিটিআই নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী বলেছেন, তার অনুমান সারা পাকিস্তান থেকে ১০ থেকে ১৫ লাখ মানুষ ইসলামাবাদে পৌঁছাবে।
এদিকে রোববার ইমরান খানের কন্টেইনারে চাপা পড়ে সাদাফ নাঈম নামে এক নারী সাংবাদিক নিহত হন। এরপরই সাময়িক সময়ের জন্য লংমার্চ স্থগিত করা হয়। ইমরান খান বলেন, ‘আমরা একটি দুর্ঘটনার কারণে আজকের মিছিল শেষ করছি। আমরা এখানে থামার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
আরও পড়ুন: মৃত্যুশূন্য দিনে শনাক্ত ৮৮
সংবাদমাধ্যম বলছে, সোমবার চতুর্থ দিনে লংমার্চ আবারও শুরু হবে। এর আগে, তৃতীয় দিন শেষে গুজরানওয়ালায় পৌঁছানোর পরিকল্পনা ছিল লংমার্চে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীদের।
অন্যদিকে বিক্ষোভকারীদের মোকাবিলায় ১৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে পাকিস্তানের শেহবাজ সরকার। দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহর নেতৃত্বে গঠিত এই কমিটিতে জোট সরকারে থাকা দলগুলোর অন্য নেতারাও রয়েছেন।
আরও পড়ুন: সেই স্মৃতির হাইকোর্টে জামিন
ইমরানের দলের এই লংমার্চ নিয়ে আলোচনা করতে সোমবার প্রথম বৈঠকে বসবে এই কমিটি। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেছেন, নির্বাচন সাংবিধানিক সময়ে অনুষ্ঠিত হবে এবং ‘ইমরান খানের দলের সাথে আলোচনার কোনো সম্ভাবনা নেই।’
এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে পাকিস্তানের বিরোধী রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খানকে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হয়েছিল। সেসময় নানা নাটকীয়তার মধ্যে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতা হারায় পিটিআই সরকার।
সান নিউজ/এনকে