সান নিউজ ডেস্ক: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্ব সবচেয়ে বিপজ্জনক দশক পার করছে।
আরও পড়ুন: করোনাকে ছাড়িয়ে গেল ডেঙ্গু
মস্কো-ভিত্তিক গবেষণা ও পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান ভালদাই ডিসকাশন ক্লাবে বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) এক অনুষ্ঠানে পুতিন এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এখন সামনে আছে সম্ভবত সবচেয়ে বিপজ্জনক, অপ্রত্যাশিত এবং একইসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ একটি দশক।
পুতিন বলেন, গোটা বিশ্ব ব্যবস্থার টেকটনিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ইউক্রেইন যুদ্ধ একটি অংশ মাত্র। বিশ্বের বিভিন্ন বিষয়ে পশ্চিমাদের একাধিপত্যের ঐতিহাসিক সময় শেষ হয়ে আসছে।
আরও পড়ুন: রাসেল-শামীমার সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ
রাশিয়ার অবস্থানের পক্ষ সমর্থন করে তিনি বলেন, তার দেশকে ধ্বংস করে দেওয়ার পশ্চিমা চেষ্টার মুখে মস্কো তার অস্তিত্বের অধিকার রক্ষার চেষ্টা করে যাচ্ছে। তারা পশ্চিমা এলিটদের চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে না।
সম্প্রতি মস্কো দাবি করে, যুদ্ধক্ষেত্রে ‘ডার্টি বোমা’ ব্যবহার করতে পারে ইউক্রেন। ডার্টি বোমায় ইউরেনিয়ামের মতো তেজস্ক্রিয় উপাদান থাকে। সাধারণ বোমার মতো দেখতে এই বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হলে তেজস্ক্রিয় উপদান বাতাসে ছড়িয়ে আক্রান্তদের মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
রাশিয়ার ওই দাবির নিন্দা জানিয়েছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো। ন্যাটোপ্রধান ইয়ানেস স্টলটেনবার্গ ইউক্রেনের ডার্টি বোমা ব্যবহারের সম্ভাবনা নিয়ে রাশিয়ার দাবি উড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, উত্তেজনা বাড়াতে মস্কোর এ ধরনের দাবি করা কোনোমতেই উচিত হয়নি।
আরও পড়ুন: মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধের সুপারিশ
বৃহস্পতিবারের ভাষণের আগের দিন বুধবার রাশিয়ার কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের দায়িত্বে থাকা বাহিনীর মহড়া পর্যবেক্ষণ করেন পুতিন।
শত্রুপক্ষ বড় আকারে পারমাণবিক হামলা চালালে রাশিয়া কীভাবে একই ধরনের জবাব দেবে, তা নিয়ে ওই মহড়া চালানো হয়। এ সময় পুতিন বলেন, যতদিন পারমাণবিক অস্ত্র আছে, ততদিন সেগুলো ব্যবহার হওয়ার বিপদ থেকেই যায়।
আরও পড়ুন: আইনশৃঙ্খলা সূচকে বাংলাদেশের উন্নতি
প্রসঙ্গত, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি বিদ্রোহীদের দুই রাষ্ট্র ‘দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক’ ও ‘লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক’কে স্বীকৃতি দিয়ে শান্তি রক্ষায় ওই অঞ্চলে সেনাবাহিনী পাঠায় রাশিয়া।
পরে ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশপন্থী বিদ্রোহীদের সহায়তার লক্ষ্যে মস্কো স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীকে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার অভিযানের নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্বব্যাপী নিত্য পণ্যের দাম বেড়ে যায় যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে জার্মানিসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকেই পাল্টে যেতে শুরু করে জার্মানিসহ পশ্চিমা দেশগুলোর অর্থনীতির চেহারা। নিষেধাজ্ঞার বিপরীতে রাশিয়া থেকে জ্বালানি, ভোজ্য তেল, গ্যাস ও কয়লাসহ খাদ্যশস্যের আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। বিভিন্ন দেশে দেখা দিয়েছে মূল্যস্ফীতি।
৬ মাসের বেশি সময় ধরে চলছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। সম্প্রতি খারকিভে পাল্টা প্রতিরোধ যুদ্ধ গড়ে তোলে ইউক্রেনের সেনারা। ইউক্রেনের দাবি, ক্রেমলিনের সেনারা পিছু হটছে। গত ৬ সেপ্টেম্বর পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইউক্রেন। দেশটির উত্তর-পূর্বে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা বেড়াজালকে ভেঙে ফেলেছে তারা।
সান নিউজ/এনকে