ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
টানা চার দিন, হাজারেরও বেশি মৃত্যু আমেরিকায়। হোয়াইট হাউস কিন্তু বলেই চলেছে, ‘খারাপ সময় কেটে গেছে।’
শুক্রবার (২৪ জুলাই) একদিনে এক হাজার ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশে। তার আগের দিন, বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) এক হাজার ১৪০ জন মারা গেছেন। বুধবার এক হাজার ১৩৫ জন, মঙ্গলবার এক হাজার ১৪১ জন। শুক্রবার দেশে একদিনে সংক্রমণ বেড়েছে ৬৮ হাজার ৮০০। মোট সংক্রমিতের সংখ্যা এখন ৪২ লাখেরও বেশি। মৃত্যু দেড় লাখ ছুঁই ছুঁই। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ক্যালিফোর্নিয়া, ফ্লোরিডা, টেক্সাস ও অ্যারিজোনায়।
হোয়াইট হাউস অবশ্য শনিবারও (২৬ জুলাই) বলেছে, স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার কথা। প্রেস সচিব কেলি ম্যাকেনানি জানান, স্কুল খুলে দেওয়ার বিষয়ে জোর দিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট। তার মতে, এভাবে গৃহবন্দি থেকে বাচ্চারা মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বসন্তের সময়ে করোনা সংক্রমণের আতঙ্কে তড়িঘড়ি সব স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সেই থেকে বন্ধ রয়েছে। অভিভাবক কিংবা শিক্ষক-শিক্ষিকারা স্কুল খোলার বিষয়ে দ্বিধাবিভক্ত।
একটা বড় অংশই ভয়ে রয়েছেন। ম্যাকেনানি বলেন, ‘‘যদি পড়ুয়ারা সংক্রমিত হয়ও, আমাদের বিশ্বাস ওদের স্কুলে ফেরা উচিত। তা ছাড়া, বড়দের মতো প্রভাব বাচ্চাদের ওপরে পড়ে না।’’
ম্যাকেনানি এ কথা বললেও হোয়াইট হাউসের করোনা টাস্ক ফোর্স কিন্তু নিরুত্তর। এই দলের সদস্য ডেবরা ব্রিক্স জানিয়েছেন, বাচ্চাদের ওপরে করোনার প্রভাব এখনও অজানা। বিশেষ করে ১০ বছরের কম বয়সি বাচ্চাদের ওপরে করোনার প্রভাব ঠিক কী, তা বড় প্রশ্ন। দক্ষিণ কোরিয়ার গবেষণা রিপোর্ট দেখিয়ে ব্রিক্স বলেন, ‘‘এই রিপোর্ট অনুসারে দশের নিচে বাচ্চাদের মধ্যে সংক্রমণের হার কম। তবে তার চেয়ে বড় পড়ুয়াদের শরীরে কিন্তু করোনা পূর্ণবয়স্কদের মতোই ক্ষতিকর।’’
করোনা-প্রশ্নে জর্জরিত ট্রাম্প শনিবার ওষুধের দাম কমানো সংক্রান্ত চারটি নিদেশিকায় সই করেছেন। কূটনীতিকদের মতে, আসন্ন নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে প্রেসিডেন্ট তার ভাবমূর্তি ঠিক করতে মরিয়া। নয়া নির্দেশিকায় ইনসুলিনের মতো জরুরি ওষুধও মানুষ কম দামে কিনতে পারবেন। আমেরিকা-সহ অন্তত ৪০টি দেশে গত এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক দৈনিক সংক্রমণ হয়েছে। এর মধ্যে ব্রাজিল, ভারতের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া, জাপান, হংকং, বলিভিয়া, সুদান, ইথিয়োপিয়া, বুলগেরিয়া, বেলজিয়াম, উজবেকিস্তান, ইজরায়েলও রয়েছে। ব্রিটেনে আজ বিশেষজ্ঞেরা একটি নতুন রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত ওজন করোনা-রোগীর বিপদ বাড়াচ্ছে। সুস্বাস্থ্যের বিষয়ে জোর দিতে বলছেন বিশেষজ্ঞেরা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাসের পরামর্শ, ‘পুরনো জীবনে আমরা আর ফিরতে পারবো না। অতিমারি আমাদের জীবনযাপন বদলে দিয়েছে। সবাইকে বলছি, কোথায় যাবেন, কী করবেন, কাদের সঙ্গে দেখা করবেন, ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিন। কারণ, এর ওপরে আপনার জীবন-মৃত্যু নির্ভর করছে।’
সান নিউজ/ বি.এম.