আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশ পাকিস্তান। স্মরণকালের অন্যতম ভয়াবহ বন্যা মোকাবিলা করছে দেশটি।
আরও পড়ুন : ৫ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে এডিবি
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এমন পরিস্থিতিতে অর্থনীতির একটি হতাশাজনক চিত্র উপস্থাপন করে বলেছেন, বন্ধুপ্রতীম দেশগুলো পাকিস্তানকে এমন একটি দেশ হিসাবে দেখতে শুরু করেছে যেটি (পাকিস্তান) সর্বদা অর্থ চাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইনজীবীদের এক সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আজ যখন আমরা কোনো বন্ধুত্বপূর্ণ দেশে যাই বা ফোন করি, তখন তারা মনে করে যে আমরা (তাদের কাছে) টাকা ভিক্ষা করতে এসেছি।’
আরও পড়ুন : অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বড় চ্যালেঞ্জ
বন্যার আগে পাকিস্তানের অর্থনীতি একটি ‘চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির’ মুখোমুখি হয়েছিল। আর এই বন্যা এটিকে আরও ‘জটিল’ করে তোলে বলে জানান পাক প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, গত এপ্রিলে তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করার সময় পাকিস্তান ‘অর্থনৈতিক খেলাপি’র দ্বারপ্রান্তে ছিল এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে দেশকে খেলাপি হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করেছে তার জোট সরকার। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে তার সরকার অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা নিয়ন্ত্রণও করেছে বলে তিনি দাবি করেন।
পাকিস্তানে মুদ্রাস্ফীতি এখন ‘সর্বোচ্চ পর্যায়ে’ রয়েছে স্বীকার করে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ পরোক্ষভাবে এই ঘটনার জন্য পূর্ববর্তী পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সরকারকে দায়ী করেন।
আরও পড়ুন : পাকিস্তানের সময় অবস্থা ভালো ছিল
শেহবাজ শরিফ অভিযোগ করেন, পূর্ববর্তী শাসকরা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাথে চুক্তি লঙ্ঘন করেছে এবং বর্তমান সরকারকে কঠোর শর্তে সম্মত হতে বাধ্য করেছে। এমনকি শর্ত পূরণ না হলে আইএমএফ তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহারের হুমকিও দিয়েছে বলে জানান পাকিস্তানের এই প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, এমনকি ছোট অর্থনীতির দেশও পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গেছে এবং ‘আমরা গত ৭৫ বছর ধরে ভিক্ষার বাটি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি’। এই অঞ্চলে এমন দেশও রয়েছে যাদের জিডিপি পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধির চেয়ে কম থাকলেও বর্তমানে তারা রফতানির দিক থেকে (পাকিস্তানের চেয়ে) অনেক এগিয়ে গেছে বলেও আইনজীবীদের জানান তিনি।
আরও পড়ুন : প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি আহত
শেহবাজ প্রশ্ন করেন, ৭৫ বছর পর পাকিস্তান আজ কোথায় দাঁড়িয়ে আছে? এটি খুব পীড়াদায়ক প্রশ্ন … আমরা সর্বদা একটি বৃত্তের মধ্যে ঘুরছি। দেশে সম্ভাবনা আছে কিন্তু কাজ ‘করতে ইচ্ছার অভাব রয়েছে’বলেও জানান তিনি।
পাকিস্তানের এই প্রধানমন্ত্রী আগামী শীতে সম্ভাব্য গ্যাস সংকটের বিষয়েও সতর্ক করে বলেছেন, শীত মৌসুম আসার আগেই তিনি গ্যাসের ব্যবস্থা করতে হিমশিম খাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, বৃষ্টি ও বন্যা দেশে নজিরবিহীন বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। এমন জলবায়ু-জনিত বিপর্যয় সম্ভবত বিশ্বের আর কোথাও দেখা যায়নি।
সান নিউজ/এইচএন