ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে আশাব্যঞ্জক সাফল্য দেখিয়েছে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও ওষুধ উৎপাদনকারী অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন।
ভ্যাকসিনটির প্রথম ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষে সোমবার (২০ জুলাই) আন্তর্জাতিক মেডিক্যাল জার্নাল ল্যানসেট জানিয়েছে, ভ্যাকসিনটি নিরাপদ ও রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সক্ষম।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভ্যাকসিনটি মানবদেহে প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টিতে কার্যকর। দশ জন অংশগ্রহণকারীর একটি সাব-গ্রুপ গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে ১ হাজার ৭৭ জনের দেহে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট প্রয়োগ করা হয়। ফলাফলে দেখা গেছে পরীক্ষার ৫৬ দিন পর্যন্ত শক্তিশালী অ্যান্টিবডি উৎপাদন ও টি-সেল রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলেছে। দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার পর এই ফল আরও বেশি হতে পারে।
গত ছয় মাসে ছয় লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়া করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে একটি ভ্যাকসিনের অপেক্ষায় ছিল সারা বিশ্ব। কয়েক মাসের অবিরাম চেষ্টা ও গবেষণার পর অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি উদ্ভাবিত ভ্যাকসিনের ফলাফল বিশ্ববাসীকে আশার আলো দেখাবে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকরা লাইসেন্স করা এই ভ্যাকসিনটির নাম সিএইচএডিওএক্সওয়ান এনকোভ-১৯ (ChAdOx1 nCoV-19)। এই ভ্যাকসিন তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে ‘সিএইচএডিওএক্সওয়ান’ ভাইরাস, যা মূলত সাধারণ সর্দিকাশির দুর্বল ভাইরাস (অ্যাডেনোভাইরাস) হিসেবে পরিচিত। এটি শিম্পাঞ্জিকে সংক্রমিত করে। গবেষকেরা এ ভাইরাসের জেনেটিক পরিবর্তন করেছেন, যাতে তা মানুষের ক্ষতি না করে।
সব পরীক্ষা সফল হলে অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন গ্রুপ আশা করছে, চলতি বছরের শেষ নাগাদ তারা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন বাজারে দিতে পারবে।
অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন গবেষণার নেতৃত্বে থাকা অধ্যাপক সারাহ গিলবার্ট বলেন, আমাদের ভ্যাকসিনটি মহামারি ঠেকাতে পারবে কিনা তা নিশ্চিত হতে আরও অনেক কাজ বাকি আছে। কিন্তু প্রথম ধাপের পরীক্ষার ফল আশাব্যঞ্জক।
গবেষণা দলের প্রধান অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির অ্যান্ড্রিউ পোলার্ড বলেছেন, আমরা আশা করছি এই ফলাফলের অর্থ হলো শরীরের ইমিউন ব্যবস্থা ভাইরাসটিকে চিহ্নিত করতে পারবে এবং আমাদের ভ্যাকসিন মানুষকেব দীর্ঘ সময়ের জন্য সুরক্ষা দেবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানিয়েছে, অন্তত ১৪০টি টিকা আবিষ্কারের প্রকল্প চলছে সারা বিশ্বে। তার মধ্যে অন্তত ১৩টি টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে প্রথম সারিতে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়।