সান নিউজ ডেস্ক: ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, খাদ্যপণ্য ও জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় বিশ্বজুড়ে যে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে তার পেছনে রাশিয়া দায়ী। একই সঙ্গে তিনি দ্বীপ রাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় দেখা দেওয়া রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সঙ্কটের জন্যও মস্কোকে দায়ী করেছেন।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় কারফিউ জারি
বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) এনডিটিভি’র প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা জানায়।
জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনে আগ্রাসনের জন্য রাশিয়া যে কৌশলগুলো ব্যবহার করেছে তার মধ্যে একটি হল অর্থনৈতিক ধাক্কা দেওয়া। রাশিয়া তার এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য খাদ্য ও জ্বালানি সরবরাহ শৃঙ্খলে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। এর ফলে খাদ্য ও জ্বালানি সঙ্কটে ভুগতে দেখা যাচ্ছে বিশ্বের অনেক দেশকে।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে এশিয়ান লিডারশিপ কনফারেন্সে বক্তৃতা দেওয়ার সময় শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি তুলে ধরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, খাদ্য ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির মর্মান্তিক ঘটনা সামাজিক বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। এটা কীভাবে শেষ হবে তা এখনো কেউ জানে না।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান
২ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার দ্বীপ রাষ্ট্রটি ১৯৪৮ যুক্তরাজ্য থেকে স্বাধীনতার লাভের পর সবচেয়ে কষ্টদায়ক অর্থনৈতিক দুরবস্থায় পড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে দ্রব্যমূল্য ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। এছাড়া বিদ্যুতের ঘাটতি চরমে পৌঁছেছে। বিদেশি মুদ্রার অভাবে শ্রীলঙ্কা বিদেশ থেকে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য আমদানি করতে পারছে না। দাম পরিশোধ করতে না পারায় জীবন রক্ষাকারী ওষুধ থেকে শুরু করে সিমেন্ট পর্যন্ত সব গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের ভয়াবহ সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কায় গোতাবায়া রাজাপাকসের গঠন করা সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলন সহিংসতার পর্যায়ে পৌঁছালে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে।
কিন্তু আন্দোলনকারীরা প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করতে থাকেন। এরই মধ্যে শনিবার (৯ জুলাই) আন্দোলনকারীরা প্রেসিডেন্টে ও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে হামলা চালায়। আন্দোলনকারীদের কাছ থেকে বাঁচতে সে সময় প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে প্রেসিডেন্ট বাসভবন থেকে পালিয়ে নৌবাহিনীর একটি ঘাঁটিতে আশ্রয় নেন।
আরও পড়ুন: বিশ্বজুড়ে মৃত্যু বেড়েছে
সেখান থেকে মঙ্গলবার (১২ জুলাই) রাতে শ্রীলঙ্কার একটি সামরিক বিমানে পরিবার নিয়ে মালদ্বীপে পালিয়ে যান তিনি। বর্তমানে শ্রীলঙ্কার এ প্রেসিডেন্ট মালদ্বীপ থেকে সিঙ্গাপুরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বিপর্যস্ত সময় যাচ্ছে। অর্থনীতি কার্যত ধ্বসে পড়েছে দেশটির। জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে চরম ক্ষোভ ও হতাশা। এই ক্ষোভ থেকেই বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে পুরো দেশ। পুরো পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।
সান নিউজ/এনকে