আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় দিবস ৪ জুলাই। বিগত বছরগুলোতে এই তারিখে আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠানো হলেও এবার তার হচ্ছে ব্যাতিক্রম।
আরও পড়ুন : ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্র করছে একটি মহল
ইউরোপের পূর্বাঞ্চলে অর্থাৎ ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সামরিক অভিযানের জেরে ওয়াশিংটনের চরম ‘অবন্ধুত্বপূর্ণ’ আচরণের কারনে চলতি বছর আমেরিকার জাতীয় দিবসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ভ্লাদিমির পুতিন কোনো শুভেচ্ছাবার্তা পাঠাননি বলে জানিয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন।
সোমবার (৪ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে ক্রেমলিনের প্রেস সেক্রেটারি ও মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘এ বছর আসলে (যুক্তরাষ্ট্রকে) অভিনন্দন জানানোর মতো পরিস্থিতি নেই। মার্কিন অবন্ধুসুলভ বিভিন্ন নীতিই এই পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য দায়ী।’এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স, এএফপি।
এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগুর সঙ্গে সোমবার বৈঠক করেছেন পুতিন। সে বৈঠকে রুশ বাহিনীকে ইউক্রেনে অভিযান চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন : ১২ মৃত্যুতে ফের আতঙ্কে দেশ!
রোববার (৩ জুলাই) লিসিচানস্ক শহর দখলের মধ্যে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ লুহানস্কের পুরো এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে সক্ষম হয় রুশ বাহিনী।
রুশ সেনারা লুহানস্কের বিজয়কে অনুপ্রেরণা হিসেবে ধরে নিয়ে যেন ইউক্রেনে তাদের অভিযানের দৃঢ়তা অব্যাহত রাখে— সোমবারের বৈঠকে শোইগুকে সেই নির্দেশ দিয়ে পুতিন বলেন, ‘আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনীর পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিামাঞ্চল শাখার সমস্ত ইউনিটকে কেন্দ্রের নির্দেশিত পরিকল্পনা অনুযায়ী অনুযায়ী অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে।’
‘আমি আশা করি, লুহানস্কে যা হয়েছে— অন্যান্য এলাকায়ও তার ধারবাহিকতা বজায় রাখবে আমাদের সেনারা।’
আরও পড়ুন : ঈদে মানতে হবে ১২ নির্দেশনা
পাশাপাশি রুশ সেনাবাহিনীর যেসব ইউনিট লুহানস্ক অভিযানে অংশ নিয়েছে, সেসব ইউনিটের সেনাদের আপাতত বিশ্রামে রাখার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে সীমান্তে আড়াই মাস সেনা মোতায়েন রাখার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
এই ঘোষণা দেওয়ার দু’দিন আগে ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চল দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন তিনি।
আরও পড়ুন : ভারতীয় গরুর দাপটে খামারিরা আতঙ্কে
লুহানস্ক ও প্রতিবেশী প্রদেশ দোনেৎস্ক মিলেই ইউক্রেনের শিল্পসমৃদ্ধ অঞ্চল দনবাস; লিসিচানস্ক বাদে লুহানস্কের বাকি অংশ আগেই দখলে নিয়েছিল রাশিয়া ও তার রুশভাষী ইউক্রেইনীয় মিত্ররা। লুহানস্কের শেষ অবস্থান লিসিচানস্ক থেকে রোববার ইউক্রেইন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণার মধ্য দিয়ে ক্রেমলিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হাসিল হলো।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার ১৩১তম দিনে গড়িয়েছে ইউক্রেনে রুশ সেনাদের অভিযান। এই চার মাস সময়ের মধ্যে লুহানস্ক ছাড়াও ইউক্রেনের দুই বন্দর শহর খেরসন ও মারিউপোল, দনেতস্ক প্রদেশের শহর লিয়াম, মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ জাপোরিজ্জিয়ার আংশিক এলাকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে রুশ বাহিনীর হাতে।
সান নিউজ/এইচএন