ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক :
গত বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) থেকে নিখোঁজ হওয়ার পর শহরের উত্তরাঞ্চলের মাউন্ট বোগাক এলাকা থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের মেয়র পার্ক ওন-সুনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সে এলাকাতেই সর্বশেষ তার ফোনের সিগন্যাল পাওয়া গিয়েছিল।
এদিকে মেয়র পার্ক ওন-সুনের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
তার বিরুদ্ধে সম্প্রতি যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠায় তিনি এ কাজ করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শুক্রবার তার সরকারি বাসভবনে সুইসাইড নোট পাওয়ার পর তা প্রকাশ করেছে পুলিশ। হাতে লেখা এই নোটে তিনি ক্ষমা চেয়েছেন।
তিনি লিখেছেন, সবার কাছে আমি দুঃখিত। আমার জীবনে যারা ছিলেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। পরিবারের প্রতি আমি দুঃখিত, যাদের জন্য আমি শুধু বেদনার কারণ হয়েছি। সবাইকে বিদায়।
সুইসাইড নোটে তিনি তার দেহ দাহ করে সেই ভষ্ম নিজের বাবা-মায়ের সমাধিতে ছিটিয়ে দেয়ার জন্য বলেছেন। তবে যৌন হয়রানির অভিযোগের বিষয়ে কিছু উল্লেখ করেননি তিনি।
আত্মহত্যার কয়েক ঘণ্টা আগে পার্কের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেন তার ব্যক্তিগত সহকারী। অভিযোগে ওই নারী উল্লেখ করেছেন, কর্মঘণ্টায় তিনি যৌন হয়রানি ও অনুপযুক্ত অঙ্গভঙ্গির শিকার হয়েছেন।
কার্যালয় সংযুক্ত বেডরুমে তাকে জোর করে আলিঙ্গনও করা হয়েছে। কর্মঘণ্টা শেষ হওয়ার পর আন্ডারওয়ারের সেলফি ও বাজে বার্তা পাঠাতেন পার্ক।
পুলিশ পার্কের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বৃহস্পতিবার পার্ক ওন-সুনের মেয়ে পুলিশকে জানিয়েছিলেন, তার বাবা বাসা থেকে বের হওয়ার আগে একটি মেসেজ রেখে গেছেন। পরে শহরের উত্তরাঞ্চলের মাউন্ট বোগাক এলাকায় তার মরদেহ পাওয়া যায়।
২০১১ সালে প্রথমবার সিউলের মেয়র নির্বাচিত হন পার্ক। গত বছরের জুনে তৃতীয় ও শেষ মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হন তিনি। প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইনের লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সদস্য পার্ককে বিবেচনা করা হচ্ছিল ২০২২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সম্ভাব্য পদপ্রার্থী হিসেবে।
মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে পার্ক অ্যাক্টিভিস্ট ও মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয়ের স্বপক্ষে আইনজীবী হিসেবেও ভূমিকা রেখেছেন। দক্ষিণ কোরিয়ায় চলমান সামাজিক বৈষম্য এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধেও সোচ্চার ছিলেন তিনি। আইনজীবী হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ায় যৌন হয়রানির দায়ে অভিযুক্ত প্রথম ব্যক্তিকে তিনি দোষী সাব্যস্ত করেন। সূত্র: বিবিসি।
সান নিউজ/সালি