আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেনে টানা চার মাসের অধিক সময় ধরে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। এই যুদ্ধে মস্কোর কাছে বিস্তৃত ভূখণ্ড হারিয়েছে কিয়েভ, বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শহর দখলে চলে গেছে।
আরও পড়ুন : দেখিয়ে দিয়েছি আমরাই পারি
তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সেভেরোদোনেতস্ক-সহ রাশিয়ার দখলে চলে যাওয়া ইউক্রেনীয় শহরগুলো জয় করে আবারও ফিরিয়ে আনা হবে।
পাশাপাশি তিনি আরও জানিয়েছেন, বর্তমান সময়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া বা পরিচালনা করা কঠিন হয়ে উঠছে।
রোববার (২৬ জুন) বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
আরও পড়ুন : রাশিয়ান স্বর্ণ আমদানি নিষিদ্ধ!
প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি শনিবার (২৫ জুন) গভীর রাতে দেওয়া ভিডিও ভাষণে বলেন, ইউক্রেনে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৫টি রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র এবং রকেট আঘাত হেনেছে। রুশ এই হামলাকে তিনি তার জনগণের মনোবল ভাঙ্গার জন্য নিষ্ঠুর কিন্তু ধ্বংসাত্মক প্রচেষ্টা হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
‘সেভেরোদোনেতস্ক, দোনেতস্ক, লুহানস্ক-সহ (রাশিয়ার কাছে হারানো) আমাদের সকল শহরকে আমরা ফিরিয়ে আনবো।’বলেও তিনি দাবি করেন।
গত শনিবার ইউক্রেনের লুহানস্কের সেভেরোদোনেতস্ক শহরের দখল নিয়েছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। এর মাধ্যমে পুরো লুহানস্ক অঞ্চলটি মস্কোর দখলে চলে এলো। অবশ্য একইদিন দেওয়া ওই ভাষণে জেলেনস্কি রুশ নিয়ন্ত্রণ থেকে ভূখণ্ড ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকারও করেছেন।
আরও পড়ুন : কমছে ভোজ্যতেলের দাম
বিগত কয়েক সপ্তাহের নৃশংস লড়াইয়ের পর শনিবার দিনের শুরুতেই মস্কোর বাহিনীর কাছে পতন হয় সেভেরোদোনেতস্ক শহরের। আর এদিন রাতে দেওয়া ভাষণেই প্রথমবারের মতো সেভেরোদোনেতস্ক নামটি উল্লেখ করেন জেলেনস্কি। জানিয়েছে রয়টার্স।
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট বলেছেন, এদিকে আগ্রাসন শুরুর চার মাস পার হওয়ার পর এসে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে উঠছে।
তিনি বলেছেন, ‘যুদ্ধের এই পর্যায়ে এটি আধ্যাত্মিকভাবে কঠিন, মানসিকভাবে কঠিন ... এই যুদ্ধ আর কতদিন চলবে, বিজয় অর্জন করার আগে আমাদের আরও কত আঘাত, ক্ষতি এবং প্রচেষ্টার প্রয়োজন হবে সে সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণা নেই।’
আরও পড়ুন : বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে ডোপ টেস্ট
তিনি আরও বলেছেন, ইউক্রেনের ওপর ক্রমাগত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এটিই প্রমাণ করে যে, কিয়েভকে সাহায্য করার জন্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো যথেষ্ট নয়। এছাড়া ইউক্রেনের আরও অস্ত্রের প্রয়োজন বলেও দাবি করেন।
জেলেনস্কির ভাষায়, ‘আমাদের মিত্রদেশ ও অংশীদারদের হাতে থাকা আধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এখন স্টোরেজের মধ্যে রাখা উচিত নয়, এমনকি প্রশিক্ষণের কাজেও এখন এগুলোকে ব্যবহার করা উচিত নয়। এগুলো এখন ইউক্রেনের প্রয়োজন। বিশ্বের যেকোনো জায়গার চেয়ে এগুলো বেশি প্রয়োজন আমাদের।’
আরও পড়ুন : যুক্তরাষ্ট্রকে ঝুঁকিতে ফেলছেন পুতিন
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে রাশিয়ান সৈন্যরা ইউক্রেনে হামলা শুরু করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো।
ইউক্রেনে রাশিয়ান এই আগ্রাসনকে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ বলে আখ্যায়িত করছে মস্কো। এছাড়া যুদ্ধের শুরুতে পুরো ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড আক্রান্ত হলেও রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর মূল মনোযোগ এখন দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাস এলাকায়।
সান নিউজ/এইচএন