আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউরোপের পূর্বাঞ্চলের দেশ ইউক্রেনে টানা প্রায় চার মাস ধরে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। যুদ্ধ শুরুর পর দীর্ঘসময় অতিবাহিত হলেও আগ্রাসন অবসানের কোনো লক্ষণ নেই। উপরন্তু দিনের পর দিন জোরালো রুশ আক্রমণে দেশটির পূর্ব এলাকা বিধ্বস্ত হচ্ছে।
আরও পড়ুন : পাঁচ মিনিটে ফল পাল্টানো সম্ভব না
চলমান পরিস্থিতিতে রুশ গান ও বই নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেন। রোববার (১৯ জুন) ভোটাভুটির মাধ্যমে পূর্ব দেশটির পার্লামেন্ট এ বিষয়ে সম্মতিও দিয়েছে।
সোমবার (২০ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, দেশটির মিডিয়া এবং প্রকাশ্যে কিছু রুশ সংগীত নিষিদ্ধ করার পক্ষে ভোট দিয়েছে ইউক্রেনীয় পার্লামেন্ট। অবশ্য এই নিষেধাজ্ঞা সকল রুশ সংগীতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।
আরও পড়ুন : কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গেরিলা পেট্রো
মূলত ১৯৯১ সালের পর থেকে যারা রাশিয়ার নাগরিক হয়েছেন বা ছিলেন, তাদের তৈরি বা পরিবেশিত গান নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে ইউক্রেন।
এছাড়া যেসব রুশ শিল্পী ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের নিন্দা করেছেন তারা এই নিষেধাজ্ঞা থেকে অব্যাহতির জন্য আবেদন করতে পারেন। একইসঙ্গে রাশিয়া ও বেলারুশ থেকে বই আমদানিও এই আইনের অধীনে নিষিদ্ধ করা হবে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পূর্ব ও দক্ষিণ ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাসকারীদের অনেকেই ঐতিহাসিকভাবে রাশিয়ার সাথে একটি শক্তিশালী সংযোগ অনুভব করে থাকেন। এসব মানুষের বেশিরভাগই রুশ ভাষায় কথা বলেন।
আরও পড়ুন : টেকনাফে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ রোহিঙ্গা নিহত
কিন্তু ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলে অনেক ইউক্রেনীয় নাগরিক এখন রাশিয়ান সংস্কৃতি থেকে নিজেদের আলাদা করতে চায়। আর মূলত এই কারণেই রুশ গান ও বই নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে কিয়েভ।
বিবিসি বলছে, রোববার ইউক্রেনীয় পার্লামেন্টে অনুমোদিত বিলটিতে দেশটির টেলিভিশন, রেডিও, স্কুল, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট, হোটেল, রেস্তোরাঁ, সিনেমা এবং অন্যান্য পাবলিক স্পেসে কিছু রাশিয়ান সংগীত বাজানো বা পরিবেশন করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ইউক্রেনীয় পার্লামেন্টে ৪৫০ জন ডেপুটির মধ্যে ৩০৩ জন এই বিলের সমর্থনে ভোট দিয়েছেন।
আরও পড়ুন : দুই দলের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ১২
বিলের নথিতে বলা হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞা ‘সংগীতের মাধ্যমে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য বৈরী প্রচারের ঝুঁকি কমিয়ে দেবে এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে জাতীয়তাবাদ সম্পর্কিত সংগীতের পরিমাণ বাড়াবে’। ফলে ১৯৯১ সালের পর থেকে যারা রাশিয়ার নাগরিক হয়েছেন বা ছিলেন, তাদের তৈরি বা পরিবেশিত গান নিষিদ্ধ হবে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিল ইউক্রেন। তবে রুশ ভাষার কোনো গান বা এর সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো শিল্পী ইউক্রেনের নাগরিক হয়ে থাকলে সেগুলো নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে না।
অপরদিকে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রুশ গান ও বই নিষিদ্ধের এই আইনগুলো কার্যকর করার জন্য পার্লামেন্টে অনুমোদনকৃত বিলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির স্বাক্ষর প্রয়োজন এবং তিনি এর বিরোধিতা করবেন এমন কোনো ইঙ্গিত নেই।
আরও পড়ুন : রাত ৮টার পর মার্কেট বন্ধ
এছাড়া ইউক্রেনীয় পার্লামেন্টের উভয় চেম্বারে রুশ গান ও বই নিষিদ্ধের এই আইন বিস্তৃত সমর্থন পেয়েছে। এমনকি এই আইন এমন অনেক আইন প্রণেতাদের কাছ থেকে সমর্থন পেয়েছে যাদেরকে ঐতিহ্যগতভাবে ক্রেমলিনপন্থী বলে মনে করতো ইউক্রেনের অধিকাংশ মিডিয়া এবং সুশীল সমাজ।
সান নিউজ/এইচএন