সান নিউজ ডেস্ক: ইউক্রেনের একটি গুদামে গত সপ্তাহে হামলা চালায় রাশিয়া। কিয়েভ বলছে, ওই গুদামে প্রায় তিন লাখ টন শস্য ছিল যা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। দেশটির উপ-কৃষিমন্ত্রী তারাস ভিসোতস্কি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রথম নারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেল উত্তর কোরিয়া
জাতীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে তারাস ভিসোতস্কি বলেন, রেকর্ড অনুসারে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধের শুরুতে মাইকোলাইভের কৃষ্ণ সাগর বন্দরে ইউক্রেনের বৃহত্তম কৃষি পণ্যের ওই গুদামে আড়াই লাখ থেকে তিন লাখ টন শস্য মজুত ছিল। এর মধ্যে বেশিরভাগই গম এবং ভুট্টা।
ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই কৃষ্ণসাগরের বন্দরগুলো থেকে জাহাজে পণ্য পরিবহন করতে পারছে না ইউক্রেন। কারণ এগুলোর নিয়ন্ত্রণ করছে রাশিয়া। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। তারপর থেকেই পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করে।
এদিকে দুদেশের এই যুদ্ধের কারণে বিশ্বে খাদ্যপণ্যের দাম অনেক বেড়ে গেছে। তারমধ্যে আবার ইউক্রেনের বন্দরে পণ্য আটকে থাকায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। তবে সম্প্রতি ইউক্রেনের বন্দরগুলো থেকে নিরাপদে খাদ্য সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার এমন ঘোষণার পর আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম কমে এপ্রিলের পর্যায়ে চলে এসেছে।
এরই মধ্যে ইউক্রেনে গত মাসে কৃষিপণ্যের রপ্তানি ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটির কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শস্য, তেলবীজ এবং উদ্ভিজ্জ তেল রপ্তানি মে মাসে ৮০ শতাংশ বেড়েছে। এপ্রিল মাসের তুলনায় রপ্তানি বেড়েছে। গত মাসে ১৭ লাখ টনের বেশি কৃষিপণ্য রপ্তানি হয়েছে। তবে ২০২১ সালের মে মাসের তুলনায় এই হার উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে।
কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়েছে ভুট্টা। দেশটি প্রায় ৯ লাখ ৫৯ হাজার টন ভুট্টা রপ্তানি করেছে। অপরদিকে সূর্যমুখীর তেল রপ্তানি হয়েছে ২ লাখ ২ হাজার ৬৫০ টন।
তবে ২০২১ সালের মে মাসে ২২ লাখ টনের বেশি ভুট্টা রপ্তানি করেছে ইউক্রেন। একই সময়ে সূর্যমুখী তেলের রপ্তানি হয়েছে ৫ লাখ ১ হাজার ৮শ টন।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি বিদ্রোহীদের দুই রাষ্ট্র ‘দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক’ ও ‘লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক’কে স্বীকৃতি দিয়ে শান্তি রক্ষায় ওই অঞ্চলে সেনাবাহিনী পাঠায় রাশিয়া।
পরে ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশপন্থী বিদ্রোহীদের সহায়তার লক্ষ্যে মস্কো স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীকে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার অভিযানের নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত সংঘাত অব্যাহত রয়েছে।
সান নিউজ/এনকে