আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রুশ হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৬০ লাখেরও বেশি শরণার্থী ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা জানিয়েছে এ তথ্য। টানা এক মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা চলার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালায়। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনা শনাক্ত ৫২ কোটি ছুঁইছুঁই
বৃহস্পতিবার (১২ মে) জাতিসংঘের প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১১ মে পর্যন্ত ইউক্রেন থেকে পালিয়েছে ৬০ লাখ ২৯ হাজার ৭০৫ জন মানুষ।
সংস্থাটি আরও জানায়, ইউক্রেন ছেড়ে সাধারণ মানুষ সবচেয়ে বেশি আশ্রয় নিয়েছে প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ডে। ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী ইউক্রেনীয় পুরুষরা সামরিক চাকরির জন্য দেশ ত্যাগ করতে পারেনি। সেকারণে শরণার্থীদের ৯০ শতাংশই নারী ও শিশু বলে জানা গেছে।
তবে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেনের সীমান্ত জুড়ে প্রতিদিন শরণার্থীদের দেশ ত্যাগের প্রবণতা কিছুটা কমেছে। গত মার্চ মাসে দেশ ছেড়েছিল ৩৪ লাখ ইউক্রেনীয়। তবে এপ্রিলে দেশ ছাড়ে ১৫ লাখ মানুষ।
মে মাসের শুরু থেকে, প্রায় ৪ লাখ ৯৩ হাজার ইউক্রেনীয় বিদেশে আশ্রয় চেয়েছে এবং জাতিসংঘের অনুমান এ বছর ৮০ লাখের বেশি মানুষ ইউক্রেন থেকে পালিয়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: কয়েক দিনের মধ্যে সংকট কেটে যাবে: বাণিজ্যমন্ত্রী
জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) গবেষণা বলছে, দেশটিতে অভ্যন্তরীণভাবেও স্থানান্তর ঘটেছে ৮০ লাখ মানুষের।
ইউক্রেনের অর্থমন্ত্রী সের্হি মার্চেনকো বৃহস্পতিবার রয়টার্সকে বলেন যে তার দেশ রাশিয়ার সাথে যুদ্ধে ৮৩০ কোটি ডলার ব্যয় করতে বাধ্য হয়েছে। অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত লোকদের জন্য অস্ত্র কেনা ও মেরামত করা থেকে জরুরি সহায়তা কাজে এ অর্থ ব্যয় হয়েছে বলেও জানান তিনি। ইউক্রেনের আরও জরুরি সহায়তা দরকার বলেও জানান তিনি।
ইউক্রেনের সামাজিক নীতি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে আনুষ্ঠানিকভাবে ২৭ লাখ লোক অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হিসাবে নিবন্ধিত, যদিও প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি বলে ধারণা করা হয়।
ইউক্রেনে যুদ্ধের পূর্বে জনসংখ্যা ছিল ৩ কোটি ৭০ লাখ। তবে ক্রিমিয়া উপদ্বীপ ও পূর্বে রাশিয়াপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত দুটি অঞ্চল বাদে।
আরও পড়ুন: প্রথমবার করোনায় মৃত্যুর খবর দিল উত্তর কোরিয়া
প্রসঙ্গত, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি বিদ্রোহীদের দুই রাষ্ট্র ‘দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক’ ও ‘লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক’কে স্বীকৃতি দিয়ে শান্তি রক্ষায় ওই অঞ্চলে সেনাবাহিনী পাঠায় রাশিয়া।
পরে ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশপন্থী বিদ্রোহীদের সহায়তার লক্ষ্যে মস্কো স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীকে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার অভিযানের নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত সংঘাত অব্যাহত রয়েছে।
সান নিউজ/এনকে