ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
ভারতের ভূখণ্ডে থেকে চীনা সেনাদের স্থাপনা উচ্ছেদে কঠোর পদক্ষেপ নিল এবার মোদি সরকার। গলওয়ান উপত্যাকায় ভারতের অভ্যন্তরে চীনাদের সেনাদের গড়ে তোলা ১৬টি সেনা স্থাপনা গুড়িয়ে দিতে ওই এলাকায় ভারী অস্ত্রসহ ৪৫ হাজার সেনা পাঠিয়েছে দিল্লি।
সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৯ কিলোমিটার এলাকা দখল করে এসব স্থাপনা বানিয়েছে চীনা সেনারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি রবিবার এ খবর প্রকাশ করেছে। খবরে স্যাটেলাইটে ধরা পড়া চীনা স্থাপনার ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে।
এদিকে আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, গেল ২২ থেকে ২৬ জুনের মধ্যে তোলা ছবি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গওলওয়ানে ১৫ জুন সংঘর্ষের স্থানে অবকাঠামো তৈরি করেছে চীন। বলা হচ্ছে, ১৪ নম্বর টহল পয়েন্টটি ভারতের নিয়ন্ত্রণে ছিল বলে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। কিন্তু সেই স্থানে একের একের পর অবকাঠামো তৈরি করে সেনা বাড়াচ্ছে বেইজিং।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গোয়েন্দাদের দাবি, গলওয়ান নদী বরাবর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে প্রায় ১৩৭ মিটার অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছে চীন। বলা হচ্ছে, ওই এলকায় দীর্ঘদিন থেকে টহল দিচ্ছে ভারতীয় বাহিনী।
খবরে বলা হয়েছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর কালো ত্রিপলের ছবি সম্প্রতি ধরা পড়েছে উপগ্রহ চিত্রে। সেই ত্রিপল চীনা বাহিনীর; প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এই সম্ভাবনায় জোর দেওয়া হয়েছে। এনডিটিভির হাতেও এসেছে সেই চিত্র।
বলা হচ্ছে, সেই সেক্টরে ৯ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় ১৬টি শিবির চিহ্নিত করেছে স্যাটেলাইট ছবি। সামরিক স্তরের আলোচনায় চীন বাহিনী সরানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও সেটা খাতায়-কলমে। শুধু তাই নয় প্রকৃত সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ এলাকায় ব্যাপক সামরিক সম্ভার বাড়াচ্ছে বেইজিং।
এদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ভারত যেমন বন্ধুত্ব জানে, তেমনই চোখে চোখ রেখে কথা বলতেও জানে। চীনের মোকাবিলায় ভারত যে প্রয়োজনে কড়া মনোভাব নিতে দ্বিধা করবে না, মাসের শেষ রবিবার (২৮ জুন) ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে ভারতবাসীকে সেই বার্তাই দিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
নিয়ম মেনেই মাসের শেষ রবিবার বেলা ১১টায় ‘আবির্ভাব’ হল তার। তবে মোদীর এদিনের ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে দেশবাসীর উদ্দেশে বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি নাম না-করে নিশানা করলেন চীনকে। করোনা, আম্ফান, পঙ্গপাল হানার পাশাপাশি এদিন মোদির মুখে এসেছে লাদাখ প্রসঙ্গও।
তিনি বলেন, লাদাখে ভারতীয় ভূখণ্ডের দিকে যারা নজর দিয়েছিল, তাদের সমুচিত জবাব দেওয়া হয়েছে।’
পাশাপাশি এসেছে, নাম না-করে চীনা পণ্য বয়কটের প্রসঙ্গও, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রাপ্ত আসামের এক নাগরিকের মন্তব্যের প্রসঙ্গ এনে নরেন্দ্র মোদি বলেন, পূর্ব লাদাখের ঘটনার পরে উনি শুধুমাত্র দেশীয় পণ্য কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এছাড়া গলওয়ান উপত্যকায় চীনা সেনাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনার প্রতিরোধের প্রসঙ্গ তুলে মোদি এ দিন বলেন, আমাদের বীর সেনারা দেখিয়ে দিয়েছেন তারা কোনও অবস্থাতেই ভারতমাতার গৌরবে আঁচ লাগতে দেবে না।
সান নিউজ/ আরএইচ