ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমে যাওয়ায় ২৬ জুন শুক্রবার থেকে জুমার নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে খুলে দেয়া হয়েছে সুপ্রাচীন রোমান সভ্যতার পাদপীঠ ইতিহাস বিশ্রুত রোম মহানগরীতে মাথা উঁচু করে থাকা কেন্দ্রীয় মসজিদ।
১২ হাজার মুসল্লি ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ৩০ হাজার স্কয়ার মিটার জুড়ে ঐতিহাসিক এই মসজিদটি স্থাপত্য শিল্পের এক চোখধাঁধানো নিদর্শন। উত্তর রোমের মন্তি পারিয়লি এলাকায় ইসলামের পতাকা ওড়ানো এই বিশাল মসজিদ প্রতিষ্ঠায় মিশে আছে দারুণ চমকপ্রদ এক ইতিহাস।
রোম পৌর কর্তৃপক্ষ ১৯৭৪ সালে মসজিদ প্রতিষ্ঠার জন্য সুবিশাল জায়গা দান করলেও দীর্ঘ ১০ বছর অতিবাহিত হয়ে যায় নির্মাণ কাজ শুরু হতেই। ইতালির তৎকালীন রাষ্ট্রপতি সান্দ্রো পেরতিনি ১৯৮৪ সালে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। মসজিদ প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন ইতালীয় গোষ্ঠীর কিছু বিরোধিতা থাকলেও তৎকালীন খ্রিস্টান প্রধান ধর্মগুরু পোপ জন পল মসজিদের অনুকূলে বিশেষ সমর্থন প্রদান করেন। তারপরও বিপত্তি বাঁধে মসজিদের নকশা বিশেষ করে মিনার কতটা উঁচু হবে তা নিয়ে।
সাত পাহাড়ের মহানগর রোমের স্কাইলাইনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখার মাপকাঠিতে চলে আসে রোমেরই অভ্যন্তরে ভ্যাটিকান সিটির সিম্বোলিক গীর্জার গম্বুজের উচ্চতা। সেন্ট্রাল মসজিদের মিনারের উচ্চতা নগরীর আরেক প্রান্তে অবস্থিত ভ্যাটিকানের গম্বুজের উচ্চতার চাইতে অন্তত এক মিটার কম হবে এমন সমঝোতার মধ্য দিয়ে অবশেষে চূড়ান্ত হয় মসজিদের নকশা। বাংলাদেশসহ বিভিন্ন মুসলিম দেশের সরাসরি অর্থায়ণে নির্মাণ কাজ সুচারুরূপে শেষ হবার পর ১৯৯৫ সালের ২১ জুন আনুষ্ঠানিক ভাবে যাত্রা শুরু করে এই কেন্দ্রীয় মসজিদ।
রোম কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রতিষ্ঠায় মূল অর্থ যোগানদাতা ছিলেন সৌদি আরবের তৎকালীন বাদশাহ ফয়সাল। ইতিহাসের পাতায় সোনার হরফে লিপিবদ্ধ আছে আফগানিস্তানের প্রিন্স মুহাম্মাদ হাসান ও তার স্ত্রীর নামও। বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের অবদানও শ্রদ্ধার সাথে লিপিবদ্ধ আছে রোমের এই ঐতিহাসিক স্থাপনার প্রতিটি ইট-পাথরে। পাওলো পর্তোগেজি, ভিত্তোরিও জিলিওত্তি এবং সামী মুসাওয়ি মসজিদের নকশা প্রণয়ন করেন। পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে মুসলিম ভাইবোনেরা যারা ভূমধ্যসাগর তীরে রোমে বেড়াতে আসবেন তারা এই মসজিদে দু'রাকাত নামাজ পড়ে ধন্য হতেই পারেন।
সান নিউজ/ আরএইচ