ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
চীনের বৃহত্তম বাঁধটির অবস্থা এখন খুবই নাজেহাল। যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে বাঁধটি। আর এ কারণে ভয়ানক ঝুঁকির মুখে রয়েছে দেশটির ৪০ কোটি মানুষ।
চীনের থ্রি জর্জেস বাঁধের কাছে এরই মধ্যে বন্যা সতর্কতা জারি হয়েছে। এখানেই তৈরি হয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। জানা যায়, গত ৭০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার কবলে রয়েছে দেশটি।
চলতি মাসে চীনের দক্ষিণ-পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চল জুড়ে লাগাতার মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। লাগাতার এই বর্ষণের কারণে একাধিক নদীর জল উপচে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ অঞ্চল। আরও কয়েকটি নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। তাই নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষজনকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
কিন্তু, বর্ষণের এই ধারাবাহিকতা আর কয়েক সপ্তাহ বহাল থাকলে চীনের পক্ষে বন্যা পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। এর মধ্যে বিপজ্জনক অবস্থায় থাকা থ্রি জর্জেস বাঁধটি যদি ভেঙে যায় তাহলে গৃহহীন হবে ৪০ কোটি মানুষ! এক লপ্তে এত লোককে রাখার মতো স্থানসঙ্কুলান হবে কী করে, তা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের ঘুম ছুটেছে।
তবে জনপ্রিয় চীনা সংবাদ মাধ্যম গ্লোবাল টাইমস অবশ্য বাঁধ ভাঙার আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছে।
চীনের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভারী বর্ষণ হয়ে চলেছে। যার ফলে দক্ষিণ-পশ্চিম এবং মধ্য চীনের ২৪টি প্রদেশ প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘোষণা করা হয়েছে। বিশেষত, ইয়াংজি নদী ও থ্রি জর্জেস বাঁধের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে।
চীনের হুবেই প্রদেশের সান্দোপিং শহর পার্শ্ববর্তী ইয়াংজি নদীর উপর বিশ্বের সর্ববৃহত হাইড্রো-ইলেকট্রিক বাঁধটি তৈরি করা হয়। চীনের দাবি অনুযায়ী, এই বাঁধের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ২২ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। ২০১২ সালের জুলাই মাস থেকে চিনের এই জলবিদ্যুত্ প্রকল্পটি চালু হয়েছে। বাঁধটির মূল পরিকাঠামোর কাজ শেষ হয়েছিল ২০০৬ সালে। এই বাঁধ নিয়ে ভারত-কম্বোডিয়া এবং বাংলাদেশের তরফে একাধিক বার আপত্তি তোলা হয়েছিল। যদিও চীন সরকার সেগুলো আমলে নেয়নি।
এশিয়ান টাইমস ফিনান্সিয়ালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৪৯ সালের পর চীনে এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা। এই বন্যার কারণে থ্রি জর্জেস বাঁধের ভয়ানক ক্ষতি হয়েছে। থ্রি জর্জেস প্রকল্পের ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার ঝাও ইউনফা ইতিমধ্যে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছেন। সূত্র: এই সময়
সান নিউজ/ আরএইচ