আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেনে চলমান রাশিয়ার সামরিক বিশেষ অভিযানকে কেন্দ্র করে মার্কিন-পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, মস্কোর বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে পশ্চিমাদেরই বেশি ক্ষতি হবে।
আরও পড়ুন:আমিরাতের বড় বিনিয়োগ চান প্রধানমন্ত্রী
নিষেধাজ্ঞার কারনে পশ্চিমা বিশ্বে খাদ্য ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি পাবে বলে জানান তিনি। বিপরীতে, রাশিয়া এসব সমস্যার সমাধান করবে এবং আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে বলেও জানান এই রুশ নেতা।
বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) অনুষ্ঠিত রুশ সরকারের এক বৈঠক টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছে। আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেখানে ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান করার বিকল্প ছিল না। রাশিয়া এমন দেশ নয় যে, স্বল্পমেয়াদী অর্থনৈতিক লাভের জন্য নিজেদের সার্বভৌমত্বের সঙ্গে আপস করবে।
তিনি বলেন,যেকোনো অবস্থাতেই এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতো। এসব নিষেধাজ্ঞার কারণে কিছু প্রশ্ন, সমস্যা এবং অসুবিধা আছে। কিন্তু অতীতে আমরা সেগুলো কাটিয়ে উঠেছি এবং এখন ফের সেগুলো কাটিয়ে উঠবো। শেষ অব্দি এটি আমাদের স্বাধীনতা, স্বয়ংসম্পূর্ণতা এবং সার্বভৌমত্ব বৃদ্ধির দিকেই পরিচালিত করবে।
আরও পড়ুন:আত্মসমর্পণ করবে না ইউক্রেন
এসময় রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, রাশিয়া অন্যতম প্রধান শক্তি উৎপাদনকারী দেশ। যারা ইউরোপের এক তৃতীয়াংশ গ্যাস সরবরাহ করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছে যে, তারা আমেরিকান বাজারে মস্কোর তেল আমদানি বন্ধ করছে। ফলে সেখানে দাম বৃদ্ধি এবং মুদ্রাস্ফীতি অনেক বেড়েছে। তারা তাদের নিজেদের ভুলের ফল আমাদের ওপর দোষারোপ করার চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন:দেশে খাদ্য পণ্যের সংকট নেই
প্রসঙ্গত, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি বিদ্রোহীদের দুই রাষ্ট্র ‘দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক’ ও ‘লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক’কে স্বীকৃতি দিয়ে শান্তি রক্ষায় ওই অঞ্চলে সেনাবাহিনী পাঠায় রাশিয়া।
আরও পড়ুন:মায়ের সঙ্গে কারাগারে ৭ মাসের শিশু
পরে ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশপন্থী বিদ্রোহীদের সহায়তার লক্ষ্যে মস্কো স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীকে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার অভিযানের নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
এদিকে প্রথমবারের মতো আলোচনায় বসেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ও ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা। তুরস্কের আঙ্কারায় বহুল প্রতীক্ষিত এ বৈঠকটি হয়। দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন বৈঠকে কোনো ফলাফল আসেনি। কারণ রাশিয়া ইউক্রেনকে আত্মসমর্পণ করতে আহ্বান জানিয়েছে। যা ইউক্রেন কখনো মেনে নেবে না।
আরও পড়ুন:নো-ফ্লাই জোন ঘোষণায় দ্রুত যুদ্ধ শেষ হবে
ইউক্রেন যুদ্ধ বিরতি ও মারিউপোলে মানবিক করিডোর তৈরির জন্য প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে ইতিবাচক কোনো কিছু বলেননি।
তবে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি ফের লাভরভের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চান।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ইউক্রেন কূটনৈতিকভাবে চলমান এ দ্বন্দ্বের সমাধান করতে রাজি আছে। কিন্তু তারা রাশিয়ানদের কাছে আত্মসমর্পণ করবেন না।
আরও পড়ুন:দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক
দিমিত্রো কুলেবা আরও জানিয়েছেন, এখন যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা রাশিয়ার নেই। তারা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে। যেহেতু রাশিয়া এ যুদ্ধ শুরু করেছে ফলে রাশিয়াকেই এটি বন্ধ করতে হবে। ইউক্রেন চাইলেও যুদ্ধ বন্ধ করতে পারবে না।
আরও পড়ুন:ভাসানচরে পৌঁছালো আরও ২৯৮৪ রোহিঙ্গা
তবে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলতে এসে ভিন্ন কথা বলেছেন রাশিয়ার পররাষ্টমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, রাশিয়া তাদের দাবিগুলো ইউক্রেনের সামনে তুলে ধরেছে। তাছাড়া মানবিক করিডোরের বিষয় নিয়েও কথা হয়েছে।
আরও পড়ুন:দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ২৮ মার্চ হ...
এর আগে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা করছে, ইউক্রেনে সামরিক অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে পাল্টা হামলায় রাশিয়ার ৫-৬ হাজার সেনা নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন:চার পর্যটকের বিরুদ্ধে মামলা
ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান শুরুর দুই সপ্তাহের মাথায় মার্কিন কর্মকর্তারা সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজের কাছে এই মন্তব্য করেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সান নিউজ/ এইচএন