আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাশিয়া এবার গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে । মস্কো বলছে, পশ্চিমারা যদি তাদের তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তবে জার্মানিতে গ্যাস পাইপ লাইনের প্রধান সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে। খবর বিবিসির।
আরও পড়ুন: নারী-পুরুষের সমতা গড়বে টেকসই ভবিষ্যৎ
রুশ উপ-প্রধানমন্ত্রী আলেক্সান্ডার নোভাক বলেন, রাশিয়ান তেল প্রত্যাখ্যান করা হলে এর পরিনতিতে বৈশ্বিক বাজারে বিপর্যয় নেমে আসবে। ফলে তেলের দাম দ্বিগুণ হয়ে এক ব্যারেলের দাম ৩শ ডলারে পৌঁছাবে।
ইউরোপের দেশগুলোতে রাশিয়া থেকে গ্যাস সরবরাহ হয় ৪০ শতাংশ এবং তেলের সরবরাহ যায় ৩০ শতাংশ। সুতরাং মস্কোর সঙ্গে তেল এবং গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হলে সঙ্গে সঙ্গেই বিকল্প কোনো দেশের কাছ থেকে তা পাওয়া এতটা সহজ হবে না।
এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার জ্বালানির ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে একটি খসড়া পরিকল্পনা তৈরি করেছে। বর্তমানে রাশিয়া থেকে মোট চাহিদার প্রায় অর্ধেক গ্যাস ও কয়লা, তেলের এক তৃতীয়াংশ আমদানি করে থাকে ইউরোপের দেশগুলো।
ফ্রান্সে আগামী বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) এবং শুক্রবার ( ১১ মার্চ) একটি বৈঠকে এই পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হবে।
আরও পড়ুন: নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল
ইউক্রেনে রুশ সামরিক হামলাকে ইউরোপীয় ইতিহাসের বিশাল পালাবদল বলে বর্ণনা করা হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ানোর পাশাপাশি জ্বালানির জন্য রাশিয়ার বদলে অন্য বিকল্প খোঁজার প্রতি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ও শনাক্ত বেড়েছে
রাশিয়া থেকে বর্তমানে আট শতাংশ তেল আমদানিকারক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, ভেনেজুয়েলা এবং ইরানের মতো দেশগুলোর সঙ্গে চুক্তি করার চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: আমি বিরক্ত ও বিব্রত!
এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে একের পর এক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা। তবে এই নিষেধাজ্ঞা থেকে রাশিয়া লাভবান হবে। গত শুক্রবার (৪ মার্চ) বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে পুতিন বলেন, যারা মস্কোকে সহযোগিতা করতে অস্বীকার করবে তারা রাশিয়ার পাশাপাশি নিজেদেরও ক্ষতি ডেকে আনবে। কিন্তু সেই ক্ষতি সত্ত্বেও তার দেশ ‘নতুন দক্ষতা’ প্রকাশ করছে এবং ‘যেসব সমস্যা সামনে আসছে তারা সমাধানও’ করছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত একটি সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত সরকারি এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় পুতিন ইউক্রেনে রাশিয়ার কর্মকাণ্ডের বিরোধিতাকারীদের সতর্ক করে তার দেশের ওপর আরও বিধিনিষেধ দিয়ে ‘পরিস্থিতি আরও খারাপ না করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, তার সরকার প্রতিবেশীদের সঙ্গে ‘সম্পর্ককে আরও খারাপ করবে’ এমন পদক্ষেপ নেওয়ার ‘কোনো প্রয়োজন’ দেখছে না।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে আমাদের কোনো খারাপ উদ্দেশ্য নেই।
পুতিন বলেন, আমি মনে করে প্রত্যেকের অবশ্য ভাবা উচিত কিভাবে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা যায়। পারস্পরিক সমঝোতা স্বাভাবিক করা হয়, স্বাভাবিক সম্পর্ক গড়ে তোলা যায়।
আরও পড়ুন: দেশে মৃত্যু ও শনাক্ত কমেছে
এ সময় পুতিন তার আগের দাবির পুনরাবৃত্তি করে বলেন, রাশিয়ান সামরিক বাহিনীর এখন পর্যন্ত গৃহীত সব পদক্ষেপ ‘একচেটিয়া ভাবে রাশিয়ান ফেডারেশনের বিরুদ্ধে কিছু অবন্ধুসুলভ পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায়’ নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: পাইলটের দক্ষতায় বেঁচে গেছি
প্রসঙ্গত, ভ্লাদিমির ভ্লাদিমিরোভিচ পুতিন লেনিনগ্রাদে জন্মগ্রহণকারী রুশ প্রজাতন্ত্র বা রাশিয়ার অন্যতম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি ২য় মেয়াদে ৭ মে, ২০১২ তারিখ থেকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ক্ষমতাসীন। এর পূর্বে ২০০০ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি এবং ১৯৯৯ থেকে ২০০০ ও ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশ পরিচালনা করেছেন। এছাড়াও, ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি ইউনাইটেড রাশিয়া দলের সভাপতি এবং রাশিয়া ও বেলারুশের মন্ত্রীসভার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
সান নিউজ/ এইচএন