সান নিউজ ডেস্ক: ইউক্রেনের বন্দর নগরী মারিউপোলে শনিবার (৫ মার্চ) যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়। ওই শহরে প্রায় দুই লাখ মানুষ বসবাম করেন। রুশ বাহিনীর ক্রমাগত বোমা বর্ষণের কারণে এসব মানুষ শহরে আটকা পড়েছেন।
আরও পড়ুন: ফের মারিউপোলে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা
লোকজনকে শহর ছাড়ার জন্য ৫০টি বাসের ব্যবস্থা করা হয়। বেশির ভাগ মানুষকে এই বাস পেতে শহরের কেন্দ্রে যেতে হয়েছে। তবে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার দুই ঘণ্টারও কম সময়ে রুশ সেনারা কামানের গোলা বর্ষণ শুরু করে।
এতে যেসব বাসিন্দা শহর ছাড়তে চাচ্ছিলেন তাদের অনেকেই মাঝপথে আটকা পড়েন। কিন্তু রাশিয়া অভিযোগ করেছে তাদের সৈন্যরা নয় বরং, ইউক্রেনের সেনারা যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে।
এদিকে ওই শহরে গত পাঁচদিন ধরে পানি, বিদ্যুৎ এবং খাবার নেই। সেখানে খাবার এবং পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। তবে মারিউপোল শহরে নতুন করে আবারও যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। শহরের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেখানে নতুন করে আরেকটি সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে।
রোববার (৬ মার্চ) স্থানীয় সময় সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা (বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা থেকে রাত ১টা) পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকবে।
আরও পড়ুন: জায়েদকে বিজয়ী ঘোষণার রায় স্থগিত
অনেক বাসিন্দা জানিয়েছেন, তারা শহর ছেড়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ার মধ্যেই নতুন করে গোলাবর্ষণ শুরু হয়। অনেকেই বোতলজাত পানি পান করছেন। কিন্তু সেটাও যথেষ্ঠ পরিমাণে নেই।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রোববার পুলিশ বিভিন্ন দোকানপাট খুলে দিয়ে লোকজনকে সেখান থেকে খাবার নিতে বলেছে। কারণ খাবার এবং পানির তীব্র সংকটে দিন পারছে সেখানকার মানুষ।
বাসিন্দাদের অভিযোগ এই যুদ্ধবিরতি আসলে মিথ্যা। গোলাবর্ষণ বন্ধ হচ্ছে না। তারা বলেন, যদি আবারও যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হয় তবে আমরা শহর ছাড়ার চেষ্টা করব। কিন্তু আমরা জানিনা সেটা সত্যি কিনা।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার ১১ দিন চলছে। সংঘাতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেশটির বিভিন্ন শহর। এর মধ্যেই ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ৮৮ বিমান ও হেলিকপ্টার হারিয়েছে রাশিয়া। এছাড়া বেশ কয়েকজন রাশিয়ান পাইলটকেও আটক করা হয়েছে।
মাইকোলিয়াভ অঞ্চলে রাশিয়ার বেশ কিছু সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। ইউক্রেনের সৈন্যদের প্রতিরোধ দেখে রুশ বাহিনী মনোবল হারিয়ে ফেলছে বলেও দাবি করা হয়।
এদিকে ইউক্রেন যুদ্ধে পোল্যান্ডের সঙ্গে একটি চুক্তির বিষয়ে বিবেচনা করছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। ওই চুক্তির মাধ্যমে সোভিয়েত আমলের কিছু যুদ্ধবিমান ইউক্রেনকে দেবে পোল্যান্ড। এর বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র পোল্যান্ডকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দেবে।
আরও পড়ুন: রোমানিয়ায় পৌঁছেছেন ২৮ নাবিক
এদিকে, ইউক্রেনের নাগরিকদের উদ্দেশ্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তারা রাশিয়ার এই আগ্রাসনের আঘাত সহ্য করছেন। তিনি দেশের নাগরিকদের এই কঠিন লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
এর আগে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে এই পরিস্থিতিতে পরাজিত করতে ছয় দফা পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। একইসঙ্গে ইউক্রেনে মস্কোর পরাজয় নিশ্চিত করতে নতুন উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়তে বিশ্ব মোড়লদের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
সান নিউজ/এনকে