সান নিউজ ডেস্ক: রাশিয়া ও ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে নয়াদিল্লি। আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের খারকিভ শহরে রুশ বাহিনীর বোমাবর্ষণে ভারতীয় শিক্ষার্থী নবীন শেখারাপ্পা জ্ঞানগউধরের মৃত্যুর ঘটনায় দুই দেশের রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অবিলম্বে খারকিভসহ বিভিন্ন শহরে আটকে পড়া ভারতীয়দের ইউক্রেনের বাইরে যাওয়ার জন্য ‘নিরাপদ পথ’ (সেফ প্যাসেজ) দেওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে দুই পক্ষকে। দেশটির পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা পৃথকভাবে রুশ ও ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করে এই বার্তা দেন।
আরও পড়ুন: বেলারুশকে আমেরিকার হুঁশিয়ারি
ইউক্রেনের খারকিভ শহরে রুশ বাহিনীর বোমাবর্ষণে ভারতীয় শিক্ষার্থী নবীন শেখারাপ্পা জ্ঞানগউধরের মৃত্যুর পরই কূটনৈতিক কার্যক্রম চালায় নরেন্দ্র মোদি সরকার। মঙ্গলবার বিকেলে নয়াদিল্লির রুশ ও ইউক্রেনীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এ বিষয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি টুইটারে লিখেছেন, ‘খারকিভসহ যুদ্ধবিধ্বস্ত শহরগুলোতে যে ভারতীয় নাগরিকেরা আটকে পড়েছেন, তাদের অবিলম্বে নিরাপদ বের হওয়ার পথ দিতে পররাষ্ট্র সচিব ফের রাশিয়া ও ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূতের কাছে দাবি জানিয়েছেন।’
মঙ্গলবার ( ১ মার্চ) যুদ্ধের ষষ্ঠ দিনে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহর লক্ষ্য করে আক্রমণ বাড়িয়েছে রুশ সেনা। মরণপণ প্রতিরোধ করছে ইউক্রেন সেনারাও। এ পরিস্থিতিতে সেখানে আটক ভারতীয়, বিশেষত শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত মোদি সরকার। নিহত নবীনের এক বন্ধু জানিয়েছেন, খাবার আনতে বেরিয়ে ছিল তার বন্ধু। বাকিরা হোস্টেলে থাকলেও নবীন ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতেন। তার ওই ফ্ল্যাটটি ঠিক গভর্নর হাউসের পেছনে। সেখানেই হামলা করেছে রুশ সেনারা।
আরও পড়ুন: এবার পুতিনের পাশে কিম
খারকিভে আটক অন্য এক ভারতীয় শিক্ষার্থী বলেন, ‘সোমবার সকালে আমাদের দ্রুত শহর ছাড়তে বলা হয় ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে। তারপর আমরা আর দূতাবাস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানাচ্ছে, রুশ বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র হানা এড়াতে খারকিভে আটক ভারতীয়দের ট্রেনে করে ইউক্রেনের পড়শি দেশগুলোতে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কারণ, গাড়িতে গেলে রুশ বাহিনীর আক্রমণের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কিন্তু খারকিভ স্টেশনে আটক বহু ভারতীয় এখনো ট্রেনে উঠতে পারেননি বলে আটক ওই শিক্ষার্থীর দাবি।
এদিকে, ষষ্ঠ দিনেও ইউক্রেনে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। ইউক্রেনের বহু এলাকা কয়েকদিনেই ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনে যেকোনো ধরনের যুদ্ধাপরাধের বিচার করা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে যুক্তরাজ্য। মঙ্গলবার (১ মার্চ) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের ৭০ সেনা নিহত
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এবারই প্রথম ইউরোপের প্রথম দেশ হিসাবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ এবং সমুদ্রপথে ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় হামলা শুরু করেছে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র বৃষ্টির মতো পড়েছে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে ইউক্রেনে সামরিক আগ্রসন শুরু করেছে রাশিয়া। সংকট নিরসনে আলোচনায় বসতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শুক্রবার ইউক্রেনমুখী সৈন্য অগ্রগতি স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন, কিন্তু কিয়েভ আলোচনা প্রত্যাখ্যান করায় শনিবার ফের অগ্রসর হতে শুরু করে রুশ বাহিনী।
সান নিউজ/এনকে