আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ভারি ট্যাংক নিয়ে ঢুকে পড়েছেন রুশ সেনারা। শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকালে এক টুইটে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ দাবি করেছে।
টুইটে বলা হয়েছে, শত্রুরা’ পৌঁছে গেছে ওবোলন এলাকায়। শহরের প্রাণকেন্দ্রে ইউক্রেনের পার্লামেন্ট থেকে ওই এলাকার দূরত্ব ৯ কিলোমিটারের মতো।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা দপ্তর স্থানীয়দের উৎসাহ দিচ্ছে, যেন তারা মলোটভ ককটেল বানিয়ে রুশ বাহিনীকে প্রতিরোধের লড়াইয়ে যোগ দেয়। পাশাপাশি বেসামরিকদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে।
টুইটে বলা হয়েছে, ‘শান্তিপ্রিয় বাসিন্দারা, সতর্ক থাকুন, নিজের বাড়ি ছেড়ে যাবেন না!’
আরও পড়ুন: আমি ও আমার পরিবার তাদের টার্গেট
এর আগে শুক্রবার সকাল থেকেই কিয়েভে গোলাগুলি চলারও খবর এসেছিল আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। বেশ কয়েকটি বড় ধরনের বিস্ফোরণেরও খবর পাওয়া গেছে কিয়েভে।
এর আগে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী বলেছে, রাজধানী কিয়েভের উপকণ্ঠে দিমার ও ইভানকিভ এলাকায় সংঘর্ষ চলছে। ওই এলাকায় রাশিয়ার বেশ কিছু সাঁজোয়া যান ঢুকে পড়েছে। রুশ সেনার কিয়েভের খুব কাছে পৌঁছে গেছে।
ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ভাদিম দেনিসেনকো রয়টার্সকে বলেছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় রাশিয়া ৩৩টি বেসামরিক জায়গায় হামলা চালিয়েছে।
ইউক্রেন সেনাবাহিনী এর আগে ফেসবুক পেজের পোস্টে বলেছে, কিয়েভের উত্তর পশ্চিমে রুশ সেনাদের প্রতিহত করতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন ইউক্রেনের সেনারা। রাশিয়ার সেনাবাহিনী যাতে কিয়েভের দিকে আর এগোতে না পারে, সে জন্য তেতেরিভ নদীর সীমান্তবর্তী একটি সেতু ধ্বংস করে দিয়েছেন ইউক্রেনের সেনারা।
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়ার ‘সেনা অভিযানের’ প্রথম দিনে গতকাল বৃহস্পতিবার ১৩৭ ইউক্রেনীয় নাগরিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩১৬ জন।
জেলেনস্কি বলেন, ‘আজ আমরা ১৩৭ জন বীর, আমাদের নাগরিক, সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তিদের হারিয়েছি।’ এ ছাড়া আরও ৩১৬ জন মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
এর আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সামরিক অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেওয়ার পর ইউক্রেনের কয়েকটি শহরে বিভিন্ন দিক থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। আক্রমণ শুরুর প্রথম এক ঘণ্টায় ইউক্রেনের ৪০ জনের বেশি সৈন্য এবং ১০ বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানি ঘটেছে।
আরও পড়ুন: পুতিনকে যুদ্ধ থামাতে বললেন ম্যাক্রোঁ
অন্যদিকে, ইউক্রেনে বলছে, পাল্টা প্রতিরোধে রাশিয়ার অন্তত ৫০ দখলদার সৈন্য নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী এক বিবৃতি জানিয়েছে, দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর খারকিভে চারটি ট্যাংক ধ্বংস করেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। এছাড়া, বিচ্ছিন্নতাবাদী লুহানস্ক অঞ্চলের একটি শহরে ৫০ রুশ সেনাকে হত্যা এবং ছয়টি সামরিক আকাশযান ধ্বংস করা হয়েছে। এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে রাশিয়া।
ইউক্রেনীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় খেরসন অঞ্চলে রুশ বাহিনীর হামলায় তাদের তিন সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। জখম হয়েছেন আরও কয়েকজন।
সান নিউজ/এনকে