আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দীর্ঘদিন ধরে চলমান রুশ-ইউক্রেন সংকট অবশেষে যুদ্ধে রূপ নিয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদেমির জেলেনস্কি অভিযোগ করে জানিয়েছেন, আশার কথা শুনিয়ে বিশ্বনেতাদের কেউ এখন পাশে নেই।
বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে এক ভিডিও বার্তায় অভিযোগ করেন তিনি ।
প্রসঙ্গত, চলমান উত্তেজনার অবসান ঘটিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) সকালে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। এরপর ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রুশ সেনারা। সূত্র: আলজাজিরা।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, বিশ্বনেতাদের কেউ যুদ্ধে ইউক্রেনকে সাহায্য করতে রাজি নয়। বিদেশি নেতাদের সঙ্গে অনেকবার আমার কথা হয়েছে। তাদের অনেক আশার কথা শুনেছি।
কিন্তু আমাদের দেশের আত্মরক্ষার বিষয়টি সামনে আসার পর সবাই আমাদের একা করে দিয়েছে। কে আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত? সত্যি কথা বলতে, আমি কাউকে দেখছি না।
ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য করতে সবাই ভয় পায় বলেও এসময় মন্তব্য করেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ন্যাটোতে আমাদের যোগদানের নিশ্চয়তা দিতে কে প্রস্তুত? সত্যি বলতে, সবাই ভয় পায়।
দেশটির ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়ে মিত্র দেশগুলোর সহায়তা পাননি বলেও অভিযোগ করে জেলেনস্কি বলেন, আমি সবাইকে জিজ্ঞেস করেছি, তারা আমাদের সঙ্গে আছে কিনা। তারা বলেছে, তারা আমাদের সঙ্গে আছে, কিন্তু আমাদের তাদের জোটে নিতে প্রস্তুত নয়।
এসময় ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি যুদ্ধের বিষয় জানিয়ে বলেন, রুশ আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৩৭ ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ৩১৬ জন।
অপরদিকে প্রথম দিনে ইউক্রেনে কমপক্ষে ১২ জন রুশ সেনার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে রাশিয়া। হামলার প্রথম দিনটিকে সফল বলে মনে করছে মস্কো।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের ১ লাখ নাগরিক ঘরছাড়া হয়েছেন। এছাড়া কয়েক হাজার নাগরিক ইউক্রেন ছেড়ে পার্শ্ববর্তী দেশে আশ্রয় নিয়েছেন।
ন্যাটো প্রধান জেন্স স্টলটেনবার্গ রাশিয়ার এ হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘অবিবেচক ও উস্কানিমূলক হামলা’।
২৪ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, এতে ‘অসংখ্য’ মানুষের জীবন চরম ঝুঁকির মুখে পড়েছে। সংবাদ জানিয়েছে এএফপি।
জেন্স স্টলটেনবার্গ বলেন, ন্যাটোর মিত্র দেশগুলো ‘রাশিয়ার আগ্রাসনমূলক পদক্ষেপের পরিণতি মোকাবেলার ব্যাপারে বৈঠক করবে।’
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমি ইউক্রেনে রাশিয়ার বেপরোয়া ও উস্কানিমূলক হামলার কঠোর নিন্দা জানাচ্ছি। এ হামলার কারণে অসংখ্য বেসামরিক নাগরিকের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের বারবার সতর্ক বাণী উচ্চারণ এবং এ সংকটের কূটনৈতিক সমাধানের পথ খুঁজে বের করার ব্যাপারে জোর প্রচেষ্টা চালানো সত্ত্বেও আবারো রাশিয়া একটি সার্বভৌম ও স্বাধীন দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের পথ বেছে নিলো।’
আরও পড়ুন:ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে পুতিনকে মোদির ফোন
স্টলটেনবার্গ বলেন, ‘এটি আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন এবং ইউরো-আটলান্টিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি বড় হুমকি। দ্রুত রাশিয়ার সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করতে হবে এবং ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও ভূখন্ডগত অখন্ডতার প্রতি সম্মান জানাতে আমি মস্কোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন:আজ পিলখানা হত্যা দিবস
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এই ভয়ঙ্কর সময়ে ইউক্রেনের জনগণের পক্ষে রয়েছি। ন্যাটো তাদের সকল মিত্র দেশকে রক্ষায় সবকিছু করবে।’সূত্র : বাসস।
সান নিউজ/ এইচএন