আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতে কিছু নারী হিজাব পরেন না বলে ধর্ষণের হার সর্বোচ্চ। স্কুল-কলেজে হেডস্কার্ফ পরা নিয়ে দেশটির কর্ণাটক রাজ্য যখন উত্তপ্ত, তখন এমন কড়া মন্তব্য করেছেন ওই রাজ্যে কংগ্রেসের একজন বিধায়ক জমির আহমেদ।
তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ইসলামে হিজাব অর্থ হলো পর্দা। যখন মেয়েরা বয়ঃপ্রাপ্ত হয়, তখন তাদের সৌন্দর্য্যকে আড়াল করে রাখে এই পর্দা।
তিনি আরও বলেন, আপনি এখন দেখতে পাবেন ভারতে ধর্ষণের হার সর্বোচ্চ। এর কারণ কি বলে মনে করেন? এর কারণ হলো, অনেক নারী হিজাব পরেন না।
বার্তা সংস্থা এএনআই’কে তিনি আরও বলেছেন, তবে হিজাব পরা বাধ্যতামূলক নয়।
যারা নিজেদেরকে সুরক্ষিত রাখতে চান এবং যারা চান যে, তাদের সৌন্দর্য্য অন্যরা না দেখুক- তারাই হিজাব পরেন। এই রীতিই বছরের পর বছর ধরে পালিত হয়ে আসছে।
প্রসঙ্গত, কর্ণাটকের উদুপি জেলায় গভর্নমেন্ট গার্লস পিইউ কলেজে ৬ ছাত্রীকে মাথায় স্কার্ফ পরার কারণে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি গত মাসে।
ঘটনাটি শুধু কর্ণাটক, ভারতকেই নাড়া দিয়েছে এমন নয়। এ ইস্যুটি বিশ্ব মিডিয়ায় শিরোনাম হয়েছে। এর কারণ, ছাত্রীরা স্কার্ফ পরার দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন।
পাশাপাশি পাল্টা বিক্ষোভ করেছে উগ্রপন্থি বিজেপির সমর্থক ছাত্ররা ও বহিরাগতরা। তারা মুসকান নামের একজন মুসলিম ছাত্রীকে হেনস্তা করেছে। কয়েকশত বিজেপি সমর্থক ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিয়ে তাকে ঘিরে ধরার চেষ্টা করে। এত নেতাকর্মীর আক্রমণে মোটেও বিচলিত হননি মুসকান।
তিনি চিৎকার করে পাল্টা স্লোগান দিয়েছেন- ‘আল্লাহু আকবর’। তার এই ভিডিও সারাবিশ্বের মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে। পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে দৃঢ় প্রতিবাদের কারণে তিনি বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদের পোস্টার গার্ল হয়ে উঠেছেন।
প্রসঙ্গত, এ ইস্যুটি ওঠে কর্ণাটক হাইকোর্টে। গত শুক্রবার ( ১১ ফেব্রুয়ারি) এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী আদেশ দিয়েছে কোর্ট।
তাতে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত শ্রেণিকক্ষে হিজাব, গেরুয়া শাল বা কোনো রকম ধর্মীয় পোশাক এড়িয়ে চলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদেরকে।
এদিকে এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে মুখ খুলেছেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।
তিনি জানিয়েছেন, নারী কোন কাপড় পরবে না পরবে সেটি ঠিক করার অধিকার সংশ্লিষ্ট নারীর এবং ভারতীয় সংবিধানেও তাদের সেই অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
গত বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) এক টুইট বার্তায় প্রিয়াঙ্কা গন্ধী একথা জানান বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
আরও পড়ুন: গণধর্ষণের পর ছাদ থেকে নিক্ষেপ
বুধবার সকালে টুইট বার্তায় প্রিয়াঙ্কা গান্ধী লিখেছেন, ‘বিকিনি হোক কিংবা ঘোমটা, জিন্স বা হিজাব যেটাই হোক, তিনি কী পরতে চান তা সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে একজন নারীর।
নারীর এই অধিকারটি ভারতীয় সংবিধানের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে। আর তাই নারীদের হয়রানি করা বন্ধ করুন।’
আরও পড়ুন: হিজাবে নিষেধাজ্ঞা স্বাধীনতার লঙ্ঘন
এই টুইটে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী #লাড়কি হু, লড়সাকতি হু (আমি নারী, আমি লড়তে জানি) হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেন।
সান নিউজ/ এইচএন