আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন (ন্যাটো) হচ্ছে পাশ্চাত্য দেশগুলোর জোট। এই সামরিক জোটকে ঘিরেই চলমান ইউক্রেন উত্তেজনার মধ্যেই নতুন করে সেনা মোতায়েন শুরু করেছে রাশিয়া।
তবে এবার সীমান্তে নয়, ইউক্রেন সংলগ্ন দ্বীপ ক্রিমিয়া ও দেশটির নিকটবর্তী কয়েকটি এলাকায় সেনা উপস্থিতি বাড়াচ্ছে পুতিন প্রশাসন। পাশাপাশি মিত্রদেশ বেলারুশে যৌথ সামরিক মহরা চালাচ্ছে পরাশক্তিধর রাশিয়া।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানি ম্যাক্সার টেকনোলজিস শুক্র ক্রিমিয়া ও তার আশপাশের এলাকার কিছু স্যাটেলাইট চিত্র প্রকাশ করেছে।
সেসব চিত্র বিশ্লেষণ করে জানা গেছে— ক্রিমিয়া, দেশের পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকা ও বেলারুশে সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে ম্যাক্সার টেকনোলজির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত বুধবার ( ৯ ফেব্রুয়ারি) ও বৃহস্পতিবার ( ১০ ফেব্রুয়ারি) এসব ছবি তোলা হয়েছে।
স্যাটালাইটের ছবিগুলোতে ক্রিমিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহর সিম্ফেরোপোলের অক্টায়াব্রেসকোয়ের বিমানঘঁটিতে অন্তত ৫৫০ টি সেনা ছাউনি ও কয়েকশ সামরিক যানের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে, যা পূর্বে ছিল না।
এছাড়াও, নতুন করে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে ক্রিমিয়ার উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চল নভুজেরানয়ের স্ল্যাভনে শহরেও।
তবে গতকাল শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) এসব তথ্যের সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহায়তায় ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া ছিনিয়ে নিয়েছিল রাশিয়া।
পাশ্চাত্যের আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতি বিশ্লেষকদের ধারণা, কৃষ্ণসাগরের এই দ্বীপটির ওপর নিজেদের দখলদারিত্ব নিরাপদ রাখতেই সেখানে রুশ সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে ।
অপরদিকে, রাশিয়ার অন্যতম মিত্র দেশ বেলারুশ ও দেশটির পশ্চিাঞ্চলের সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ক্রুস্ক ট্রেইনিং এরিয়াতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রুশ সেনা ও সামরিক যানের উপস্থিতি দেখা গেছে বলে জানাচ্ছে ম্যাক্সারের স্যাটেলাইট চিত্র।
বর্তমানে বেলারুশের সঙ্গে ১০ দিনের সামরিক মহড়া চালাচ্ছে পুতিন সরকার। রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্ত থেকে ক্রুস্ক ট্রেইনিং এরিয়ার অবস্থান ১১০ কিলোমিটার পূর্বে। গত প্রায় ২ মাস ধরে ওই সীমান্তে প্রায় ১ লাখ রুশ সেনা অবস্থান করছে।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অঙ্গরাজ্য ও রাশিয়ার প্রতিবেশী রাষ্ট্র ইউক্রেন কয়েক বছর আগে ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করার পর থেকেই উত্তেজনা শুরু হয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে।
সম্প্রতি ন্যাটো ইউক্রেনকে সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করার পর আরও বেড়েছে এই উত্তেজনা।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে বাস খাদে, নিহত ২
প্রসঙ্গত, ১৯৪৯ সালে গঠিত ন্যাটোকে রাশিয়া বরাবরই পাশ্চাত্য শক্তিসমূহের আধিপত্য বিস্তারের হাতিয়ার হিসেবে মনে করে; এবং ঐতিহাসিকভাবেই বিশ্বের বৃহত্তম দেশ রাশিয়া পাশ্চাত্য আধিপিত্যবাদের বিরোধী।
একসময়ের সোভিয়েত অঙ্গরাষ্ট্র ইউক্রেনের মোট জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ রুশ বংশোদ্ভুত। দেশটিতে রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীও বেশ সক্রিয়।
সান নিউজ/ এইচএন