আন্তর্জাতিক

সিরিয়ায় চাপের মুখে আসাদ সরকার

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:

সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের শহরগুলোর রাস্তায় আবার ফিরে এসেছে বিক্ষোভকারীরা। ২০১১ সালে যেখান থেকে শুরু হয়েছিল প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান। এগুলো অবশ্য গণবিক্ষোভ নয়। তবে ২০১১ সালেও শুরুতে তা ছিল না। তবে শ্লোগানগুলো একই।

পুরোনো ক্ষোভ আসলে কখনোই দূর হয়নি। দেশটির দরজা এখন সাংবাদিকদের জন্য আরো বেশি বন্ধ। কিন্তু নানা আভাস-ইঙ্গিতে বোঝা যায়, দেশটিতে জীবনধারণ ক্রমশই আরো বেশি কঠিন হয়ে পড়ছে।

এবার বিক্ষোভ শুরু হয়েছে খাদ্যাভাব নিয়ে। গত বছরের তুলনায় সিরিয়ায় খাবারের দাম এবছর দ্বিগুণ বেড়ে গেছে।

সিরিয়ার যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি। দুটি বিশ্বযুদ্ধ যোগ করলে যতদিন ধরে চলেছিল – সিরিয়ার যুদ্ধ চলছে তার চেয়েও বেশি দিন ধরে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুমান, এই যুদ্ধে প্রায় ৭ লক্ষ লোক নিহত হয়েছে, আর যারা বেঁচে আছে তাদের ৯০ ভাগই জীবন কাটাচ্ছে দারিদ্র্যের মধ্যে।

সিরিয়ার অর্থনীতিতে এই যুদ্ধের জন্য ঠিক কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা কেউ জানে না। এক হিসেবে বলা হয় দেশটিতে যে ধ্বংসলীলা চলেছে তাতে ক্ষতির পরিমাণ ৬৩ হাজার কোটি ডলারেরও কাছাকাছি হবে।

তবে নতুন করে যোগ হওয়া তীব্র খাদ্য সঙ্কট ও ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা এ ক্ষতির পরিমাণকে আরও অনেক বাড়িয়ে দিবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় দফতরের প্রধান স্যার মার্ক লোকক বলছেন, সিরিয়ানরা এখন গণক্ষুধার শিকার যা এক বা দু‌ বছর আগেও ছিল না। এবং এ ঘটনা ঘটছে এমন সময় যখন পৃথিবী কোভিড-১৯ মহামারির অর্থনৈতিক পরিণাম সবেমাত্র উপলব্ধি করতে শুরু করেছে।

সিরিয়ায় খাবারের দাম এবছর দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। এর সাথে যোগ হয়েছে লেবাননে ব্যাংক ব্যবস্থায় ধস। এতদিন সিরিয়া বহির্বিশ্বের সাথে যোগাযোগের জন্য লেবাননকে কাজে লাগাতো। তবে সম্প্রতি লেবানেনর ব্যাংকগুলো পুরোপুরি বসে যাওয়া ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখন কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করে – তখন সিরিয়ার মুদ্রার মান ধ্বসে পড়ে।

সিরিয়ায় এখনও যারা চাকরি করছেন, তাদের গড় মাসিক বেতন ৫০ হাজার সিরিয়ান পাউন্ড। গত বছরের শেষ দিকে ‍এর মূল্যমান ছিল ৫০ ব্রিটিশ পাউন্ডের সমান। আর এখন তা নেমে এসেছে ১২ ব্রিটিশ পাউন্ডে।

এর ওপর আবার যুক্তরাষ্ট্র নামক বিষফোঁড়া যেন পিছু ছাড়ছেই না সিরিয়ানদের।

সিরিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের কিছু নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ হতে যাচ্ছে এ সপ্তাহেই। এসব নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য শুধু সিরিয়া নয়, তার প্রধান দুই মিত্র ইরান ও রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে মধ্যপ্রাচ্যে তার সবচেয়ে বড় শত্রূ বলে মনে করে।

যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য যাই হোক, নতুন এসব নিষেধাজ্ঞা সিরিয়ার অর্থনীতির যেটুকু অবশিষ্ট আছে সেটাকেও ধ্বংস করে দিতে পারে।

প্রেসিডেন্ট আসাদ সম্প্রতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কিছু সামরিক বিজয়ের কারণে ক্ষমতায় অনেক বেশি সংহত এবং নিরাপদ। বিশেষ করে রাশিয়া এ কাজে তাকে সাহায্য করেছে।

কিন্তু এখন এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে যে এ যুদ্ধের শেষ পর্ব শান্তি নিয়ে আসতে পারবে না। উত্তর সিরিয়ার ভাগ্য এখন সিরিয়ানরা নির্ধারণ করবে না- করবে রাশিয়া , তুরস্ক ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

ইসলামিক স্টেটের জিহাদিরা এখন মধ্য সিরিয়ার মরুভূমিতে নিজেদের অবস্থান সংহত করতে চেষ্টা করছে। তারা আকস্মিক আক্রমণ চালিয়ে সরকার বাহিনীর সৈন্যদের হত্যা করছে।

দক্ষিণ সিরিয়ার বিদ্রোহীরা ২০১৮ সালে আত্মসমর্পণ করেছে – কিন্তু গোপন বিদ্রোহী তৎপরতা চলছেই। এখন এই অর্থনৈতিক সংকটের কারণে বিক্ষোভকারীরা আবার ফিরে এসেছে রাজপথে। তারা খোলাখুলিই ২০১১ সালের শ্লোগানগুলো দিচ্ছে, যার মূল দাবি বাশার আসাদ সরকারের পতন।

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

সবজির বাজারে স্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে কমেছে পেঁয়াজ, সবজি...

নলছিটিতে ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু

ঝালকাঠি প্রতিনিধি: ঝালকাঠির নলছিটিতে শুরু হয়েছে ভূট্টো স্মৃত...

স্বামীকে মৃত দেখিয়ে মামলা, নারী আটক

জেলা প্রতিনিধি : সাভারের আশুলিয়ায় জীবিত স্বামীকে বৈষম্যবিরোধ...

বড় দুর্ঘটনা থেকে বাঁচলেন পূজা 

বিনোদন ডেস্ক: ঢাকাই চিত্রনায়িকা ও মডেল পূজা চেরি ডজনখানেক ছব...

বৈষম‌বিরোধী আন্দোলনে বেঁচে ফেরার আশা করেনি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পতন আন্দোল&zwnj...

সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক : বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছ...

ফের বাড়ল সোনার দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের বাজারে ফের সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা...

ফের হারলো সাকিবের দল

স্পোর্টস ডেস্ক : আবুধাবির টি-টেন টুর্নামেন্টে ফের হারের মুখ...

নোয়াখালীতে দুই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার

নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীতে পৃথক স্থান থেকে দুই গৃহবধূর...

ঢাকাবাসীকে নিরাপদ রাখতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকাবাসীকে যেকোনো উপায়ে নিরাপদ রাখতে হবে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা