আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নিকারাগুয়ায় লোকদেখানো প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে দেশটির একটি মন্ত্রণালয় ও ৯ কর্মকর্তা। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের অফিস অব ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোল থেকে পাবলিক মিনিস্ট্রি এবং সরকারের ৯ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেয়া এক বিবৃতিতে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ডানিয়েল ওর্তেগা এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট রোজারিও মুরিলো ৭ নভেম্বর এমন একটি নির্বাচন করেছেন, যেখানে ভোটারদের অবাধে ভোট দিতে দেয়া হয়নি। নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। এর কয়েক মাস আগে থেকেই সাতজন প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থী, বিরোধী দলের সদস্য, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী এবং নাগরিক সমাজের ৩৯ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষ্পেষণ চালানো হয়েছে। তাদেরকে জেলে পাঠানো হয়েছে। বছরের পর বছর ধরে ওর্তেগা-মুরিলো সরকার নিকারাগুয়ার অধিবাসীদের কাছ থেকে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কেড়ে নিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে তারা দুর্নীতিকে অনুমোদন দিয়েছে। চালু করেছে দায়মুক্তির একটি ব্যবস্থা।
এসব কারণে নিকারাগুয়ার পাবলিক মিনিস্ট্রি এবং ৯ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ। কারণ, নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রেসিডেন্ট পদে শক্তিধর বিরোধী দলীয় প্রার্থী, নাগরিক সমাজ ও বেসরকারি খাতের নেতাকর্মী, শিক্ষার্থী এবং সাংবাদিকদের গ্রেপ্তারে প্রাথমিক ভূমিকা পালন করেছে পাবলিক মিনিস্ট্রি।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি থেকে যে ৯ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তারা ২০০৭ সালের ১০ জানুয়ারিতে অথবা তারপরে যেকোনো সময়ে নিকারাগুয়া সরকারের পক্ষে কাজ করেছেন অথবা সরকারের পক্ষে কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এতে আরও বলা হয়, ওই ৯ ব্যক্তি ওর্তেগা-মুরিলো শাসকগোষ্ঠীকে নিষ্পেষণ চালানোর সুযোগ করে দিয়েছেন। এর মধ্যে আছে মানবাধিকার লঙ্ঘন। তারা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ‘ম্যানেজ’ করেছেন, যারা ওর্তেগা-মুরিলো শাসকগোষ্ঠীর অগণতান্ত্রিক কর্মকান্ডে অর্থায়ন করে। অথবা নিকারাগুয়ার মানুষের অর্থে তাদের শাসনকে টিকিয়ে রাখতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র এই নিষেধাজ্ঞা দিয়ে তার আন্তর্জাতিক অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ওর্তেগা-মুরিলো সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে। কারণ, এই সরকার নাগরিক স্বাধীনতা, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ওপর আঘাত করেছে। এর জবাব দিতে এমন আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র। একই দিনে কানাডা এবং ব্রিটেনও টার্গেটেড পদক্ষেপ নিয়েছে। এ জন্য ব্রিটেনকে স্বাগত জানান অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন।
অর্গানাইজেশন অব আমেরিকান স্টেটসের জেনারেল এসেম্বলিতে ১২ নভেম্বর পরিষ্কার করা হয় যে, প্রেসিডেন্ট ওর্তেগা এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট মুরিলো গণতন্ত্রকে আরও খর্ব করলে এবং মানবাধিকারকে প্রত্যাখ্যান করলে তাদের অধীনে নিকারাগুয়া আরও বিচ্ছিন্নতার দিকে অগ্রসর হবে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন বলেন, নিকারাগুয়াতে গণতন্ত্র ফেরানোর আহ্বান জানাই আমরা। একই সঙ্গে জেলবন্দি সব রাজনীতিকের অবিলম্বে এবং নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।
সান নিউজ/এমকেএইচ