আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চীনের শিয়ান শহরের অনেক বাসিন্দাই সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছেন, লকডাউন অবস্থায় খাবার পাচ্ছেন না এবং অতি প্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য তাদের রীতিমত যুদ্ধ করতে হচ্ছে। তারা এখনও সরকারি কোনো সহায়তা পাননি। গত কয়েকদিন ধরেই দেশটির জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম ওয়েইবোতে খাবার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য সাহায্য চাচ্ছেন লোকজন।
এক ব্যক্তি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে যে, তাদের ঘরে কোনো খাবার নেই। এক নারী জানিয়েছেন, তারা ১৩ দিন ধরে বাড়িতে আটকা পড়ে আছেন। অন্যদিকে, সরকারি কর্মকর্তারা জোর দিয়ে দাবি করছেন, পর্যাপ্ত সরবরাহ চলছে।
জানা গেছে, ফের মহামারি করেনার ধাক্কায় চীনের শিয়ান শহরে লকডাউন জারি করা হয়েছে। ফলে লোকজনকে কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে থাকতে রয়েছেন। কিন্তু লকডাউনে থাকা ওই শহরের অনেক বাসিন্দাই যথেষ্ট খাবার পাচ্ছেন না। খাদ্যের জন্য অনেক বাড়িতেই চলছে হাহাকার।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহে শিয়ান শহরের ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। করোনা সংক্রমণ রোধ করতেই এমন পদক্ষেপ নেয় কর্তৃপক্ষ। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশ বা শহরে যেভাবে লকডাউন জারি রয়েছে চীনের ওই শহরে তেমনটা নয়। সেখানে খাবারের মতো জরুরি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার জন্যও লোকজন বাড়ির বাইরে বের হতে পারছেন না।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, উত্তরাঞ্চলীয় শিয়ান শহরে নয়দিন ধরে লকডাউন চলছে। কোভিডের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স রীতির মধ্যেই গত কয়েক মাস ধরে ওই শহরে করোনার প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে খারাপ আকার ধারণ করেছিল। সে কারণেই চীন সেখানে কড়াকড়ি আরোপ করতে বাধ্য হয়েছে।
জানা গেছে, লকডাউনের শুরুতে পরিবারের একজন সদস্য দুইদিন পর একদিন খাবার বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার জন্য বাইরে যেতে পারছিলেন। কিন্তু সোমবার থেকেই বিধিনিষেধ আরও কঠোর হয়েছে। করোনাভাইরাসের পরীক্ষা ছাড়া লোকজন একেবারেই ঘরের বাইরে বের হতে পারছেন না।
সামাজিক মাধ্যমে এক বাসিন্দা লিখেছেন, আমি শুনেছি অন্যান্য জেলার মানুষজন ধীরে ধীরে সাহায্য পাচ্ছে কিন্তু আমি এখনও কিছুই পাইনি। আমাদের বাড়ির বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। আমি চারদিন আগে প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস অর্ডার করেছি কিন্তু সেগুলো পাওয়ারও কোনো লক্ষণ নেই। আমি গত কয়েকদিন ধরে একটু সবজিও কিনতে পারিনি।
অন্যদিকে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদ মাধ্যম গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, কিছু স্থানে বিভিন্ন বাড়ির কম্পাউন্ডে খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। কিন্তু যথেষ্ট স্বেচ্ছাসেবী না থাকায় বাসিন্দাদের ঘরে ঘরে খাবার সরবাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে অনেক চালক কোয়ারেন্টাইনে থাকায় পুরো শহরজুড়েই ডেলিভারিম্যানের সংকট তৈরি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৯ ডিসেম্বর থেকে শিয়ান শহরে করোনাভাইরাস সম্পৃক্ত এক হাজার ৩শর বেশি কেস শনাক্ত হয়েছে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। চীনে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৩১ হাজার ৩শ। এর মধ্যে মারা গেছে ৫ হাজার ৬৯৯ জন।
সান নিউজ/এমকেএইচ