ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
প্রতিবেশীর সঙ্গে ঝগড়ার জেরে দু’বছরের এক শিশু এবং ছয় বছরের এক বালককে পাঁচতলা থেকে ফেলে দিলেন এক ব্যক্তি। তৃতীয় একটি শিশুকেও ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন অভিযুক্ত। কিন্তু কোনও ভাবে রেলিংয়ে আটকে গিয়ে প্রাণে বেঁচে যায় সে। রবিবার মারাত্মক এই ঘটনাটি ঘটেছে মধ্য কলকাতার বড়বাজার থানা এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, বছর দুয়েকের শিশু শিভম সাউয়ের মৃত্যু হয়েছে। আশঙ্কাজনক অন্য জন। তার নাম বিশাল সাউ।
মূল অভিযুক্ত শিবকুমার গুপ্তকে আটক করে জেরা করছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ১৫ দিন আগে শিবকুমার গুপ্তর সঙ্গে মৃত শিশুর বাবার গণ্ডগোল হয়েছিল। সেই কারণেই রবিবার (১৪ জুন) বিকেলে শিভম ও বিশালকে বারান্দা থেকে নীচে ফেলে দেন শিবকুমার।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পাঁচতলায় একাধিক পরিবারের বাস। বিকেলে কয়েকটি শিশু খেলছিল ওই বহুতলের বারান্দায়। তা নিয়ে গণ্ডগোল শুরু হয়। সেই সময় শিবকুমার হঠাতই শিভম ও বিশালকে রেলিংয়ের উপর দিয়ে ফেলে দেন বলে অভিযোগ করেছে প্রত্যক্ষদর্শীরা।
অন্য প্রতিবেশীরা বাধা দেওয়ার আগেই নীচে পড়ে যায় শিভম ও বিশাল। তৃতীয় শিশুকে শিবকুমার ধাক্কা মেরে ফেলতে গেলে বাকিরা আটকে দেন। বারান্দার রেলিং ধরে কোনও মতে প্রাণে বাঁচে শিশুটি। তবে গুরুতর জখম হয় শিভম ও বিশাল। হাসপাতালে নিয়ে গেলে শিভমকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিত্সকরা। বিশালের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পুলিশ জানিয়েছে, বিশাল এবং শিভম সম্পর্কে কাকা-ভাইপো। বিশাল এর মায়ের নাম রেখা দেবী। শিভমের মা সবিতা দেবী। রেখা দেবীর অভিযোগ, অভিযুক্ত শিব কুমার গুপ্ত কারও সঙ্গেই মেলামেশা করতেন না। প্রতিবেশীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন। প্রায়ই প্রতিবেশীদের সঙ্গে তাঁর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝামেলা লেগেই থাকত। অন্য দিকে, প্রতিবেশীদের অভিযোগ, নিজের স্ত্রীর সঙ্গেও অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করতেন শিবকুমার। কয়েক বছর আগে তাঁর স্ত্রী জলে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে দাবি প্রতিবেশীদের। সেই ঘটনার পর থেকে কার্যত ঘরবন্দি হয়েই থাকতেন শিবকুমার। বড়বাজার থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং কলকাতা গোয়েন্দা পুলিশের হোমোসাইড শাখার কর্মকর্তারা শিবকুমারকে জেরা করছেন। তারা জানার চেষ্টা করছেন, কেন এ ধরনের অপরাধ করলেন শিবকুমার।