ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
নয়াদিল্লির আপত্তি সত্বেও বিতর্কিত তিন ভূখণ্ড নিজেদের মানচিত্রে যুক্ত করে নতুন একটি মানচিত্র পাস হয়েছে নেপালের পার্লামেন্টে।
শনিবার (১৩ জুন) নেপালের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে নতুন মানচিত্র অনুমোদনে আনা সংবিধান সংশোধনী বিল ভোটাভুটিতে পাস হয়ে যায়।
ভারতের আনা আপত্তি উড়িয়ে নেপালের নতুন এই মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বিতর্কিত লিম্পিয়াধুরা, কালাপানি ও লিপুলেখ ভূখণ্ডকে।
নেপালের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য সংখ্যা ২৭৫ জন। নতুন রাজনৈতিক মানচিত্রে অনুমোদন দেয়া সংবিধান সংশোধনী বিলটি পাসের জন্য প্রয়োজন ছিল দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন। শাসকদল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির পাশাপাশি প্রধান বিরোধী দল নেপালি কংগ্রেস এমনকি, ভারতীয় বংশোদ্ভূত নেপালি দলগুলোও বিলটি সমর্থন করেছে।
বিলের পক্ষে ভোট পড়েছে ২৫৮ টি। নেপালের পার্লামেন্টের প্রতিনিধি পরিষদের মুখপাত্র রোজনাথ পাণ্ডে বলেছেন, বিতর্কের পর ভোটাভুটির মাধ্যমে সংবিধান সংশোধনী বিলটি পাস হয়েছে।
শুক্রবার ১২ জুন বিহারের সীতামঢ়ীতে নেপাল পুলিশের গুলিতে ভারতীয় এক কৃষকের মৃত্যুর ঘটনায় সীমান্তে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির সরকারের নতুন মানচিত্র বিল পাসের এই পদক্ষেপ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে তিক্ততা সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ ঘটনায় নেপালের তীব্র সমালোচনা করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রী বাস্তব বলেন, কৃত্রিমভাবে এলাকা বাড়িয়ে নেয়ার এমন দাবি ভারতের পক্ষে মেনে নেয়া সম্ভব নয়। তার অভিযোগ, নেপালের এই আচরণ ‘একতরফা’ এবং ‘ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রবাহের পরিপন্থী’।
চীন অধিকৃত তিব্বত লাগোয়া পিথোরাগড় জেলার ওই তিন ভূখণ্ডকে সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয়। বহু বছর ধরেই লিপুলেখ গিরিপথ কৈলাস ও মানস সরোবরের তীর্থযাত্রীরা ব্যবহার করেন।
গত মাসে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ তাওয়াঘাট-লিপুলেখ সড়কের উদ্বোধন করেন। এই সড়ক উদ্বোধনের পর দুই দেশের মাঝে উত্তেজনা তৈরি হয়।
গত ৩১ মে নেপালের আইনমন্ত্রী শিবমায়া তুম্বাহাম্পি প্রতিনিধি পরিষদে মানচিত্র সংশোধনী বিলের খসড়া পেশ করেন। কয়েকদিন আগে প্রতিনিধি পরিষদে সদস্য সরিতা গিরি নতুন বিলের বিরুদ্ধে একটি সংশোধনী প্রস্তাব জমা দিয়েছিলেন। তাতে একতরফাভাবে মানচিত্র বদলের পরিবর্তে উত্তরাখণ্ড সীমান্তের ওই তিনটি ‘বিতর্কিত’ অঞ্চল নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দেয়া হয়।
কিন্তু নেপালের পার্লামেন্টের স্পিকার অগ্নিপ্রসাদ সাপকোটা সংবিধানের ১১২ ধারা অনুযায়ী নিজের বিশেষ অধিকার বলে প্রস্তাবটি খারিজ করে দেন। সুত্র: আনন্দবাজার।
সান নিউজ/সালি