ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে নতুন করে কয়েক লাখ শিশু শ্রমে নিযুক্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। গত দুই দশকের মধ্যে শিশুশ্রমের সংখ্যা উল্লেখ জনকভাবে কমিয়ে আনা সম্ভব হলেও এবার প্রথমবারের মতো তা বাড়তে যাচ্ছে।
শুধু তাই নয়, আগে থেকেই যেসব শিশুশ্রমে নিযুক্ত রয়েছে, তাদেরও কর্ম ঘণ্টা বেড়ে যেতে পারে।
শুক্রবার (১২ জুন) আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা (ইউনিসেফ) এর দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে এসব আশঙ্কা জানানো হয়েছে।
শুক্রবার বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে ‘কোভিড-১৯ ও শিশুশ্রম: সংকটের সময়, পদক্ষেপের সময়’ শীর্ষক যৌথ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আইএলও এবং ইউনিসেফ।
এতে বলা হয়, ২০০০ সাল থেকে শিশু শ্রমের সংখ্যা ৯ কোটি ৪০ লাখে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। তবে কোভিড-১৯ এর কারণে সে অর্জন এখন ঝুঁকির মুখে পড়েছে। কোভিড-১৯ এর ফলে এ বছরেই ৬ কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে পড়তে পারে বলে এরিমধ্যে সতর্ক করেছে বিশ্ব ব্যাংক। ইউনিসেফ ও আইএলও বলছে, দারিদ্র্য বাড়লে শিশুশ্রমও বাড়বে। কারণ বেঁচে থাকার জন্য পরিবারগুলো সম্ভাব্য সব উপায়ে চেষ্টা করবে। বিভিন্ন দেশের গবেষণাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, দারিদ্র্য এক শতাংশ বাড়লে শিশুশ্রম অন্তত দশমিক ৭ শতাংশ বাড়বে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মহামারির কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় দেশে দেশে শিশুশ্রম বেড়ে যাওয়ার আলামত এরিমধ্যে পাওয়া গেছে। করোনার কারণে বিশ্বের ১৩০টি দেশের অন্তত ১০০ কোটি শিশুর স্কুল বন্ধ রয়েছে। স্কুল চালু হলেও কিছু পরিবার তার শিশুসন্তানের শিক্ষার খরচ মেটাতে পারবে না। আর সে কারণে তারা সন্তানদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর বলেন, সংকটের সময়ে কিছু পরিবারের জন্য তা মোকাবিলার অন্যতম উপায় শিশুশ্রম। যেহেতু করোনার কারণে দারিদ্র্য বেড়েছে, স্কুল বন্ধ এবং সামাজিক সেবার সুযোগ হ্রাস পেয়েছে, তাই আরও বেশি শিশুদের কাজের দিকে ঠেলে দেওয়া হতে পারে।
করোনা মহামারি জনিত পরিস্থিতির মধ্যে যেসব শিশু মা-বাবার একজনকে অথবা দুইজনকেই হারিয়েছে, তারা সবচেয়ে বেশি শ্রম ঝুঁকিতে রয়েছে। মেয়ে শিশুদের অনেকে জীবিকার তাগিদে কৃষিকাজ ও গৃহস্থালির কাজে যুক্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সূত্র: এএফপি
সান নিউজ/ আরএইচ