নিজস্ব প্রতিবেদক: আফ্রিকার পূর্বাঞ্চলীয় দেশ সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিশুতে জাতিসংঘের একটি নিরাপত্তা বহরে আত্মঘাতী গাড়ি বোমা হামলায় অন্তত আটজনের প্রাণহানি ঘটেছে। ভয়াবহ এ ঘটনায় শিক্ষার্থীসহ আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৩ জন।
বৃহস্পতিবারের (২৫ নভেম্বর) এক বিশাল বিস্ফোরণে মোগাদিশু প্রকম্পিত হয়ে ওঠে বলে কর্মকর্তা ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, জঙ্গি সংগঠন আল-শাবাব এরই মধ্যে ভয়াবহ ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে। তারা বিস্ফোরক ভরা একটি গাড়ি ব্যবহার করে আক্রমণটি চালিয়েছে। বিস্ফোরণের পর শহরের ওপরে ঘন ধোঁয়ার একটি স্তম্ভ দেখা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলের আশপাশে গুলির শব্দ শোনা গেছে।
হতাহতদের মধ্যে জাতিসংঘের কেউ আছেন কি-না, তাৎক্ষণিকভাবে তা পরিষ্কার হয়নি বলে দাবি রয়টার্সের। একটি স্কুলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় জাতিসংঘের বহরটি লক্ষ্য করে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। যদিও মন্তব্যের জন্য করা অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেননি জাতিসংঘের কর্মকর্তারা।
মোগাদিশু পুলিশের মুখপাত্র আবদিফাতাহ আদেন হাসান বলেছেন, আমরা এখন পর্যন্ত আটজনের মরদেহ দেখেছি। পাশাপাশি ১৩ শিক্ষার্থীসহ আরও ১৭ জন এতে আহত হয়েছেন।
একটি এসইউভি ভর্তি বিস্ফোরক নিয়ে এক আত্মঘাতী হামলাকারী জাতিসংঘের নিরাপত্তা বহরকে লক্ষ্যস্থল করে বলে জানান তিনি।
আমিন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস বিস্ফোরণে আহত অন্তত ২৩ জনকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে বলে এর পরিচালক আবদিকাদির আবদি রহমান রয়টার্সের প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
আল-শাবাবের সামরিক অভিযানের মুখপাত্র আবদিয়াসিস আবু মুসাব এরই মধ্যে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আল-শাবাবের যোদ্ধারা আক্রমণটি চালিয়েছে। তারা জাতিসংঘের বহরকে লক্ষ্যস্থল করেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, মোগাদিশুর কেন্দ্রস্থলে কে-ফোর জংশনের পাশে ঘটানো ওই বিস্ফোরণ অত্যন্ত শক্তিশালী ছিল। বিস্ফোরণের ধাক্কায় নিকটবর্তী মুকাসসার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের দেয়ালগুলো ভেঙে যায়। বিস্ফোরণে অনেকগুলো গাড়ি ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে।
নিকটবর্তী ওসমান হাসপাতালের নার্স মোহাম্মদ হুসেন বলেছেন, বিস্ফোরণের ধাক্কায় আমরা কেঁপে উঠি, এরপর গুলির তীব্র শব্দে কানে তালা লেগে যায়। বিস্ফোরণে ধসে পড়া একটি সিলিংয়ের ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে আমাকে টেনে বের করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের হাসপাতালের দেয়ালগুলো ধসে পড়েছে। আমাদের অপর পাশের স্কুলও ধসে পড়েছে। আমি জানি না ঠিক কতজন এতে মারা গেছেন।
উল্লেখ্য, ক্ষমতা গ্রহণ করে দেশজুড়ে নিজেদের ধরনের কট্টর সরিয়া আইন চালু করতে চাওয়া আল-শাবাব বছরের পর বছর যাবত সোমালিয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। গোষ্ঠীটি সোমালিয়া ও অন্যান্য স্থানে প্রায়ই বোমা ও বন্দুক হামলা চালায়।
সাননিউজ/জেআই