আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
আসামের বাঘজানে অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেডের (ওআইএল) প্রাকৃতিক গ্যাসকূপে বড় ধরণের অগ্নিকাণ্ডে ফায়ার সার্ভিসের দু'জন কর্মী নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (৯ জুন) আগুন লাগার খবর পেয়ে ছুটে যায় অগ্নিযোদ্ধারা। আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে সেই সময় দুই কর্মী প্রাণ হারান। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভযাবহ এই আগুন নেভাতে সময় লাগবে অন্তত ৪ সপ্তাহ।
বুধবার (১০ জুন) ঘটনাস্থল থেকে দুই কর্মীর মরদেহ উদ্ধার করে জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) সদস্যরা।
অয়েল ইন্ডিয়ার মুখপাত্র সংবাদসংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, দুই ফায়ার সার্ভিস কর্মীর মরদেহ দুটি ঘটনাস্থলের কাছে থাকা একটি জলাভূমির থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে আগুনে পুড়ে নয়, জলে ডুবেই মৃত্যু হয়েছে তাদের। কেননা ওই কর্মীদের দেহে আগুনে পুড়ে যাওয়ার কোনও চিহ্ন নেই। তবে কী কারণে তারা মারা গেলেন তা জানার জন্য তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থলের আশেপাশে প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা জুড়ে আগুনের প্রভাব পড়েছে, পাশাপাশি তেলের কূপটি থেকে ক্রমাগত দাহ্য গ্যাস বের হওয়ায় এখনও সেই আগুন জ্বলছে, নেভানো সম্ভব হয়নি।
ভারতীয় বার্তা সংস্থা এনডিটিভির খবরে বলা হয়, দুই সপ্তাহ ধরেই গ্যাস বের হচ্ছিল কূপটি থেকে। মঙ্গলবার সেখানে হঠাৎ আগুন লেগে যায়। দমকলকর্মীদের পাশাপাশি ভারতীয় বিমানবাহিনীর কর্মীরাও আগুন নেভানোর কাজ করছেন।
এছাড়াও আগুন নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী এবং এনডিআরএফের কর্মীরাও কাজ করছে। এলাকার মানুষদের উদ্ধার ও ত্রাণ কাজে সহায়তা করছেন তারা। আর আধা সামরিক বাহিনী গোটা অঞ্চলটিকে ঘিরে রেখেছে।
গ্যাস কূপের আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তার জন্য সিঙ্গাপুর থেকে তিন সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থলে কাজ শুরু করেছে।
ঐ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ওই তেলের কুয়োর গ্যাস লিক করা বন্ধ হতে অন্তত ৪ সপ্তাহ সময় লাগবে। ফলে এই আগুন আরও ভয়াবহ আকার নেবে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আগুনের লেলিহান শিখা ৩০ কিলোমিটার দূর থেকেও দেখা যাচ্ছিল। এ কারণে আশপাশের এলাকার মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আগুনে পুড়ে গেছে কূপের আশপাশের অসংখ্য গাছপালা, বাড়িঘর, জমির ফসল।
যে গ্যাসকূপে আগুন লেগেছে, তা ডিব্রু সাইখোয়া জাতীয় উদ্যান ও মাগুরি মোট্টাপাং জলাভূমির কাছে অবস্থিত হওয়ায় পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য নিয়েও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
খবরে বলা হয়, আপাতত ওই এলাকার ১.৫ ডিগ্রি ব্যাসার্ধ এলাকায় বসবাসরত প্রায় ৬ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে ত্রাণ শিবিরে রাখা হয়েছে।
তেল ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার প্রতি ৩০ হাজার করে টাকা আর্থিক সাহায্য করার ঘোষণা করেছে।
সান নিউজ/সালি