আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পৃথিবীকে বাঁচাতে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে একত্রিত হয়েছেন বিশ্বনেতারা। জাতিসংঘের কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলনে অঙ্গীকার করেছেন ২০৩০ সালের মধ্যে বন উজাড় নয় বরং নতুন বনায়ন করবেন তারা।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) একটি চুক্তি স্বাক্ষরের কথা রয়েছে। কপ ২৬ সম্মেলনের এখন পর্যন্ত এটাই বড় পদক্ষেপ।
অ্যামাজন বনের বিশাল অংশ বিনাশকারী ব্রাজিলও এই চুক্তিকে স্বাক্ষর করবে। এ ছাড়া বনভূমি ধরে রাখতে সরকারি ও বেসরকারি সাহায্য মিলিয়ে ১৯.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি তহবিলও এই চুক্তির আওতায় গঠন করা হবে। খবর বিবিসি অনলাইনের।
স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে শুরু হওয়া দুই সপ্তাহব্যাপী এই জলবায়ু সম্মেলনকে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণে আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হচ্ছে। এই চুক্তিকে কানাডা, ব্রাজিল, রাশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলোও স্বাক্ষর করতে সম্মত হয়েছে। পৃথিবীর মোট বনের প্রায় ৮৫ শতাংশ এসব দেশে রয়েছে।
এই চুক্তির অংশ হিসেবে বন উজার বন্ধে বিশ্বের ২৮ দেশের সরকার কৃষিপণ্য পাম তেল, সয়া ও কোকোয়ার মতো খাদ্যের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য থামানোরও প্রতিশ্রুতি দেবে। আর বিশ্বের ৩০টিরও বেশি বৃহৎ কোম্পানি বন উজারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এমন ব্যবসায় বিনোয়োগ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দেবে।
কঙ্গো অববাহিকায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ রেইন ফরেস্ট রক্ষায় ১.১ বিলিয়ন ডলারের আরেকটি তহবিল গড়ার ঘোষণা আসার কথাও রয়েছে।
কপ২৬ এর আয়োজক যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ভাষায়, পৃথিবীর ‘ফুসফুস’ যে বনভূমি, তা পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় এই চুক্তি হবে একটি মাইলফলক।
২০১৫ সালে ঐতিহাসিক প্যারিস চুক্তিতে রাষ্ট্রনেতারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি ওই পর্যায়ে আটকে রাখতে যা করা দরকার, তা তারা করবেন। কিন্তু সেজন্য সম্মিলিতভাবে কার্বন গ্যাস নির্গমণের পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে। আর এ কারণেই এবারের বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনকে অনেকে দেখছেন বিশ্বকে বাঁচানোর ‘শেষ সুযোগ’ হিসেবে।
বিশেষজ্ঞরা এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। পাশাপাশি তারা এই বলে সতর্কও করেছেন যে, ২০১৪ সালের চুক্তি ব্যর্থ হয়েছে এবং প্রকৃতপক্ষে বন উজারের গতি থামাতে পারেনি। প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন প্রয়োজন বলে তাগিদ দিয়েছেন তারা। গাছ কাটা জলবায়ু পরিবর্তনে ভূমিকা রাখে। কারণ গাছ উষ্ণতা সৃষ্টিকারী কার্বন ডাউ অক্সাইড গ্যাস শোষণ করে।
এছাড়া গঠিত তহবিলের অর্থ উন্নয়নশীল দেশের ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি উদ্ধার, দাবানল মোকাবিলা ও আদিবাসী সম্প্রদায়কে সহায়তায় ব্যবহার করা হবে।
সান নিউজ/এফএআর