আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট আসিয়ান সম্মেলনে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইংয়ের জায়গা হচ্ছে না। আসন্ন সম্মেলনে তিনি আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণপত্র পাবেন না।
গত শুক্রবার জোটভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জোটের সভাপতি ব্রুনাই এক বিবৃতিতে এ সংক্রান্ত বিস্তারিত সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, সম্মেলনে মিয়ানমারের পক্ষে অরাজনৈতিক কেউ প্রতিনিধিত্ব করবেন।
বিবিসি ও রয়টার্সের খবরে বলা হয়, ইন্দোনেশিয়ায় চলতি বছর এপ্রিলে আসিয়ানের বিশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানে মিয়ানমারের সংকট নিরসনে আসিয়ান নেতারা কিছু বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছেছিলেন কিন্তু এতদিনেও বিষয়গুলো বাস্তবায়িত না হওয়ায় জোটের অন্য সদস্যরা তিক্ত হয়ে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
খবরে আরও বলা হয়, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা যদি অরাজনৈতিক প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানোর প্রস্তাবে সম্মতি না দেয় তা হলে সম্মেলনে মিয়ানমারের আসন খালি রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।চলতি মাসে ২৬ থেকে ২৮ অক্টোবর ১০ দেশের জোট আসিয়ান সম্মেলন ব্রুনাইয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
জোটের পক্ষ থেকে বলা হয়, মিয়ানমারে উত্তেজনা প্রশমনে প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন দেশটির সেনাপ্রধান। তাই সম্মেলনে তাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
যদিও এ বিষয়ে আগেই গুঞ্জন চলছিল যে, এবার সম্মেলনে মিয়ানমারের জায়গা হবে না। ব্রুনাই শুধু সেই জল্পনার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিল।
এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে ৫টি বিষয়ে সমঝোতা হয়েছিল। সেগুলো হলো সহিংসতার অবসান, সব পক্ষের অংশগ্রহণে গঠনমূলক সংলাপ, আলোচনা সহজ করতে আসিয়ানের বিশেষ দূত নিয়োগ, সহায়তা গ্রহণ ও ওই দূতের মিয়নমার সফর। কিন্তু এসবের কোনো উদ্যোগই জান্তা সরকার গ্রহণ করেনি।
ইতোমধ্যে আসিয়ান এরিওয়ান ইউসুফকে মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। তবে আসিয়ানের এ বিশেষ দূত চলতি মাসেও মিয়ানমার যাচ্ছেন না বলে জানিয়েছে বেশ কয়েকটি সূত্র।
বিবিসির জোনাথান বলেছেন, সামরিক জান্তা ছাড়াই আসিয়ান বৈঠকটি মিয়ানমারের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কেননা ওই বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ অন্য বিশ^ নেতারা উপস্থিত থাকবেন। এমন একটি বৈঠকে অনুপস্থিতি বিশ্ব কূটনীতিতে জান্তার জন্য বাড়তি চাপ তৈরি করবে। এদিকে আসিয়ানে আমন্ত্রণ না পাওয়াকে মিয়ানমার সরকার বিদেশি হস্তক্ষেপ বলে বর্ণনা করছেন। সরকারের একজন মুখপাত্র এ কথা বলেছেন।
মুখপাত্র আরও বলেন, ‘এখানে বিদেশি হস্তক্ষেপ দেখা যায়। আমরা জানতে পেরেছিলাম, কয়েকটি দেশের কিছু দূত মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করেছে এবং ইইউ থেকে চাপ পেয়েছে।’
প্রসঙ্গত, চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা গ্রহণ করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। আগস্টে দেশটির সেনাপ্রধান নিজেকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করার পর জরুরি অবস্থার মেয়াদ বৃদ্ধির ঘোষণা দেন।
সান নিউজ/এমকেএইচ