আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
পুলিশের সহিংস আচরণের খতিয়ান পর্যবেক্ষণকারী একটি প্রকল্পের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ২০১৩ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত আমেরিকায় পুলিশের হাতে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৭,৬৬৬।
এর মধ্যে মাত্র ৯৯টি ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে , যা মোট হত্যার ঘটনার মাত্র ১.৩%। এবং এরমধ্যে মাত্র ২৫টি ঘটনায় পুলিশ দোষী সাব্যস্ত হয়েছে।
মিনেসোটায় পুলিশের হাতে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর আমেরিকার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে যে ব্যাপক প্রতিবাদ ও দাঙ্গা হয়েছে তাতে গণচাপের মুখে এবার পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
এদের মধ্যে ডেভিড শওভিন নামে একজন পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ আনা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে হত্যার অভিযোগ, যা পরিকল্পিত ছিল না।
এই পুলিশ অফিসার ২৫শে মে মিনিয়াপোলিস শহরে জর্জ ফ্লয়েডকে মাটিতে ফেলে তার হাঁটু দিয়ে মি. ফ্লয়েডের গলা চেপে ধরেছিল প্রায় নয় মিনিট ধরে।
আরও তিনজন পুলিশকে অভিযুক্ত করা হয়েছে মি. শওভিনকে সহযোগিতা করার ও অপরাধে মদত জোগানোর দায়ে। দোষ প্রমাণিত হলে চারজনেরই সর্বোচ্চ চল্লিশ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
বিক্ষোভকারীরা আশা করছে ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর আমেরিকায় দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ অফিসার কাউকে হত্যা করলে আইন তার ক্ষেত্রে কীভাবে প্রযোজ্য হবে তাতে একটা আমূল পরিবর্তন আসবে। কারণ তাদের আশা মি. ফ্লয়েডের ঘটনা খুবই ব্যতিক্রমী।
কিন্তু আমেরিকার আইনে, পুলিশ অফিসারদের ফৌজদারি এবং দেওয়ানি মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ আইনি সুরক্ষা রয়েছে।
ওয়াশিংটনে কেটো ইন্সটিটিউটের ফৌজদারি বিচার বিষয়ক বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্লার্ক নেইলি বিবিসিকে বলেছেন পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে কৌঁসুলিদের ফৌজদারি মামলা দায়েরের ঘটনা "খুবই বিরল"। মি. ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনা সেক্ষেত্রে ব্যতিক্রম।
তিনি বলেছেন এর কারণ পুলিশ এবং কৌঁসুলি দুজনেই আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী সংস্থার অংশ- তারা পরস্পরের সহযোগিতায় কাজ করে । অপরাধের সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ এবং মামলার সময় আদালতে সেগুলো পেশ করার ব্যাপার কৌঁসুলিরা পুলিশের ওপরই নির্ভর করেন।
তাদের এই ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে এই ব্যবস্থায় "ফৌজদারি মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে তাদের দায়বদ্ধতা প্রশ্নবিদ্ধ থেকে যায়।"
এছাড়াও শক্তি প্রয়োগের অধিকার আইনত পুলিশকে দেয়া আছে। যেমন আইন অনুযায়ী আত্মরক্ষায়, অথবা অন্য কারো মৃত্যু ও গুরুতর আহত হওয়া ঠেকাতে পুলিশ শক্তি প্রয়োগ করতে পারে।