আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মারা গেছেন পাকিস্তানের পরমাণু বোমার জনক ও বিখ্যাত বিজ্ঞানী ড. আবদুল কাদির খান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পারভেজ খাত্তাক। ড. আবদুল কাদির খানের মৃত্যুকে পাকিস্তানের জন্য বড় ধরনের ক্ষতি বলে আখ্যায়িত করেন তিনি।
রেডিও পাকিস্তান ও দ্য ডনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার (১০ অক্টোবর) মারা যান তিনি। সম্প্রতি তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। শারীরিকভাবে অসুস্থ আবদুল কাদির খান স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। রোববার ভোরে তার স্বাস্থ্যের অবস্থার অবনতি হয়।
আব্দুল কাদিরের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে টুইট করেছেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভি। শোকবার্তায় তিনি লেখেন, ড. কাদিরের মৃত্যুতে আমি মর্মাহত। তিনি আমাদের জাতির জন্য অনেক কাজ করে গেছেন। জাতিকে রক্ষা করতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। আমরা তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। ১৯৮২ সালে তিনি পারমাণবিক বোমা তৈরি করে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন। জাতি তাকে কোনদিন ভুলবে না।
অপর এক শোকবার্তায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান টুইট করেন, ড. ড. আব্দুল কাদির খানের মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। পারমাণবিক অস্ত্রের রাষ্ট্র হিসেবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদানের রেখেছেন। তিনি আমাদের জাতিকে অত্যন্ত ভালোবাসতেন। তার পারমাণবিক অস্ত্রের আবিষ্কার আমাদেরকে আগ্রাসী অনেক বড় পারমাণবিক প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে নিরাপত্তা প্রদান করেছে। পাকিস্তানের মানুষের কাছে তিনি ছিলেন জাতীয় আইকন।
এছাড়া পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পারভেজ খাত্তাক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় বলেন, ‘জাতির জন্য তার (ড. আবদুল কাদির খান) অবদানকে সবসময় শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে পাকিস্তান! আমাদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধিতে মূল্যবান অবদানের জন্য পাকিস্তানি জাতি তার কাছে চিরঋণী।’
দেশটির গণমাধ্যেমের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত আগস্ট মাসের শেষের দিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ড. আবদুল কাদির খান। এরপর গত ২৬ আগস্ট তিনি রিসার্চ ল্যাবরেটরিজ হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে তাকে রাওয়ালপিন্ডির সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
প্রসঙ্গত, ১৯৩৬ সালে ভারতের মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালে জন্মগ্রহণ করেন বিখ্যাত পরমাণু বিজ্ঞানী ড. আবদুল কাদির খান। পরে ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর পরিবারের সাথে তিনি পাকিস্তানে চলে যান। পাকিস্তানের পরমাণু কর্মসূচির জনক হিসেবে কাদির খান পাকিস্তানিদের কাছে জাতীয় বীর হিসেবে পরিচিত।
তবে ২০০৪ সালে টেলিভিশনে দেওয়া বক্তব্যের মাধ্যমে ইরান, উত্তর কোরিয়া ও লিবিয়ায় পারমাণবিক তথ্য পাচারের কথা স্বীকার করেন কাদির খান। যদিও পরে আবদুল কাদির খান তার এ বক্তব্য প্রত্যাহার করেন। এরপর পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ তাকে ক্ষমা করে দিলেও গৃহবন্দী করে রাখেন।
সান নিউজ/এমকেএইচ