ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
কেরালায় বাজি ভরতি আনারস খাইয়ে হাতি খুনের ঘটনায় কে বা কারা যুক্ত, সেই উত্তরের খোঁজে সবাই। এই পরিস্থিতিতে কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের টুইট নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা।
বৃহস্পতিবার (৪ জুন) টুইটে তিনি দাবি করেন, এখনও পর্যন্ত ৩ জন সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করেই এগোচ্ছে তদন্ত। তিনি আরও লেখেন, “পুলিশ এবং বন বিভাগ একসাথে তদন্ত শুরু করেছে। জেলা পুলিশ এবং জেলা বনদপ্তরের প্রধান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়ার জন্য আমরা প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপই নেব।” সুবিচার মিলবে বলেও আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর।
২৩ মে প্রথম রক্তাক্ত অবস্থায় হাতিটিকে দেখা যায় বলেই দাবি বন কর্মকর্তার। তবে ২ জুন তার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। কেরালার বন কর্মকর্তা মোহন কৃষ্ণণ সোশ্যাল মিডিয়ায় অন্তঃসত্ত্বা হাতিটির মর্মান্তিক মৃত্যুর কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন। তারপরই ঘৃণ্য এই ঘটনাটি ভাইরাল হয়ে যায়।
খাবারের খোঁজে ওই হাতিটি জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে চলে আসে। কিন্তু হাতিকে লোকালয়ে দেখামাত্রই ভয় পেয়ে যান স্থানীয়রা। তারা ভাবেন এই বুঝি হাতিটি কাঁচাবাড়ি কিংবা ফসলের ক্ষতি করবে। কারও প্রাণহানিরও কারণ হয়ে উঠতে পারে সে। তাই তাকে আনারসের ভিতরে বাজি ভরে খেতে দেওয়া হয়। ওই আনারস খাওয়ার পরই অসুস্থ হয়ে পড়তে থাকে হাতিটি। এরপর সে জ্বালা যন্ত্রণা লাঘব করতে বহু পথ হেঁটে একটি নদীতে শরীর ডুবিয়ে বসেছিল। সেখানেই মারা যায় অন্তঃসত্ত্বা ওই হাতিটি। যদিও বনকর্তাদের অনুমান, বুনো শুয়োর মারতে রেখে দেওয়া বাজি ভরতি আনারস ভুল করে খেয়ে ফেলেছিল হাতিটি। তার জেরে এমন মর্মান্তিক কাণ্ড ঘটেছে।
এই ঘটনা ভাইরাল হওয়ামাত্রই উঠেছে সমালোচনার ঝড়। বৃহস্পতিবার (৪ জুন) সকালে টুইটে ঘটনার কড়া নিন্দা করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। ‘এটা ভারতের সংস্কৃতি নয়’ বলে টুইটে উল্লেখও করেন তিনি। তার কয়েকঘণ্টা পরই টুইট করেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তিন জনকে সন্দেহভাজন হিসাবে চিহ্নিত করে তদন্ত এগোচ্ছে বলেই জানান তিনি।
এই ঘটনা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব নেটিজেনরাও। হাতি খুনের ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ কারও কারও। তাদের দাবি, হাতিটি মারা গিয়েছে কেরালার পালাক্কড়ে। যেখানে প্রায় ৬৮ শতাংশ হিন্দু বসবাস করেন। অথচ দাবি করা হচ্ছিল ৭০ শতাংশ মুসলমান বসবাসকারী মালাপ্পুরমে ঘটনাটি ঘটেছে। মুসলমান বিদ্বেষ তৈরি করতে বিজেপি এই কারসাজি করছে বলেই অভিযোগ।