আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
করোনা আতংক, কারফিউ এমনকি ট্রাম্পের ক্রোধান্বিত হুমকি, কিছুই যেন পিছু হটাতে পারছে না মার্কিন বিক্ষোভকারীদের। আর সেই সাথে পুলিশি অত্যাচার যেন আরো বেশী উস্কে দিচ্ছে এই বিক্ষোভকে।
অ্যামেরিকায় শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকরা প্রায়শই হেনস্থার শিকার হয়ে থাকেন। কিন্তু এবার তা মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। গত ২৫ মে নিরস্ত্র একজন কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের সময় একজন পুলিশ অফিসার হাঁটু দিয়ে তার গলা চেপে ধরার পর ওই ব্যক্তির মৃত্যু দেশটিতে সংখ্যালঘু বর্ণ সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পুলিশের নৃশংসতাকে আবার সামনে এনেছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের উদাসীনতা এবং বর্ণ-বিদ্বেষী আচরণ এ ঘটনাকে বিক্ষোভে রূপ দিয়েছে। ৪০ টি শহরে কারফিউ জারি করেও এই আন্দোলন থামানো যাচ্ছে না। অনেক শহরে পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে।
লাঠি চার্জ, টিয়ার শেল নিক্ষেপ, এমনকি মরিচের গুড়াও ছোড়া হচ্ছে বিক্ষোভকারীদের উপর। এর মধ্যে ট্রাম্পের টুইট যেন আগুনে ঘি ঢেলে দিল। প্রশাসনকে দিয়ে সব ঠাণ্ডা করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ট্রাম্প লেখেন, হিংস্র কুকুর লেলিয়ে দেওয়া হবে।
পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না বলে অন্তত আটটি প্রদেশে নামানো হয়েছে ‘ন্যাশনাল গার্ড’। রোববার (৩১ মে) সন্ধ্যার পর থেকে ঘটনাস্থল মিনিয়াপোলিসের প্রায় সব রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। টহল দিচ্ছে আকাশে একাধিক সেনা হেলিকপ্টার। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এই প্রথম বার দেশটিতে ন্যাশনাল গার্ডের পুরো বাহিনীকেই রাস্তায় নামানো হল।
উল্লেখ করার মত বিষয় হল, শুধু কৃষ্ণাঙ্গরাই বিক্ষোভ করছে না, শ্বেতাঙ্গরাও এবার তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কিছু কিছু শহরে পুলিশও বিক্ষোভে সমর্থন দিয়েছে। ব্রুকলিনে এক শ্বেতাঙ্গ বিক্ষোভকারী বললেন, ‘‘বারবার এমন ভুল হতে পারে না। কালো মানুষদের নিকেশ করার একটা চক্রান্ত চলছে।’’
সুবিচারের দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছে হলিউডও। লেডি গাগা লিখেছেন, ‘‘খুন মানে খুনই। পুলিশেরও সাধারণ খুনির মতোই শাস্তি হওয়া উচিত।’’ বিয়ন্সের সাফ কথা, ‘‘কোনও নির্দিষ্ট বর্ণের মানুষের হয়ে কথা বলছি না। কিন্তু প্রকাশ্য দিবালোকে এমন ঘটনার থেকে চোখ ফিরিয়ে থাকা যায় না।’’
ডেনভারে হাজার হাজার মানুষ মুখে বেঁধে ও পেছনে হাত রেখে 'আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিনা' শ্লোগান দিয়ে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে অংশ নিয়েছে।
মানুষ বড় ধরণের প্রতিবাদে অংশ নিয়েছে আটলান্টা, বোস্টন, মিয়ামি ও ওকলাহোমা শহরে।
উল্লেখ্য যে, পুলিশ হেফাজতে কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকান জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এক সপ্তাহ আগে বিক্ষোভ শুরুর পর প্রায় একশ ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। মিস্টার ফ্লয়েডকে হত্যার দায়ে একজন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
সান নিউজ/ বি.এম.