আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
লিবিয়ায় মানব পাচারকারীদের হাতে ২৬ বাংলাদেশি নিহত ও ১২ জন আহত হয়েছেন। দেশটির মিজদা শহরে বৃহস্পতিবার (২৮ মে) এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লিবিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস।
জানা যায়, কাজের সন্ধানে ১৫ দিন আগে একটি মানব পাচারকারী দলের সাথে লিবিয়ার বেনগাজী থেকে মরুভূমির পথ পাড়ি দিয়ে ত্রিপলিতে যাচ্ছিল ৩৮ বাংলাদেশি। পথেই তাদের জিম্মি করে সন্ত্রাসীরা।
আহতদের মধ্যে একজনের বরাত দিয়ে বলা হয়, “১৫ দিন আগে বেনগাজী থেকে মরুভূমি পাড়ি দিয়ে কাজের সন্ধানে মানব পাচারকারীরা তাদের লিবিয়ার ত্রিপলি শহরে নিয়ে আসছিল। পথে মিজদাহ শহরে তিনিসহ মোট ৩৮ বাংলাদেশিকে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশে জিম্মি করে দুষ্কৃতকারীরা। জিম্মি অবস্থায় তাদের অত্যাচার, নির্যাতন করার একপর্যায়ে অপহৃত ব্যক্তিরা মূল অপহরণকারী লিবিয়ান ব্যক্তিকে হত্যা করে। এর জেরে অন্যান্য দুষ্কৃতকারীরা আকস্মিকভাবে তাদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে। গুলিতে ২৬ বাংলাদেশি নিহত হয়।”
দূতাবাস জানায়, নিহতদের লাশ মিজদাহ হাসপাতালে রয়েছে। আহতরা হাতে-পায়ে, বুকে-পিঠে গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মরদেহগুলো বর্তমানে মিজদাহ হাসপাতালের মর্গে পরবর্তী প্রক্রিয়ার জন্য সংরক্ষিত রয়েছে। আর আহত ১২ বাংলাদেশিকে জিনতান হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ত্রিপলি মেডিক্যাল সেন্টারে (টিএমসি) পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানা যায়।
ত্রিপলিতে পৌঁছানো পর দূতাবাস থেকে আহতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ঘটনার বিস্তারিত ও নিহতদের পরিচয় জানার উদ্যোগ নেওয়া হবে। আহতদের চিকিৎসার ব্যাপারে দূতাবাস হতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়।
লিবিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত এস কে সেকেন্দার আলী বলেন, ঘটনাটি এমন একটি অঞ্চলে ঘটেছে সেটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। এখানে দুপক্ষের যুদ্ধ চলমান। দুপক্ষের ফ্রন্ট-লাইনে পড়েছে এই মিজদাহ শহর। এই অঞ্চলে সরকারি কর্তৃপক্ষের কাজ করাটা অনেক মুশকিলের ব্যাপার। তবে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।
এদিকে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় মোট ৩০ জন নিহত হয়েছে। লিবিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ২৬ বাংলাদেশি ও চারজন আফ্রিকান অভিবাসী।
সান নিউজ/ বি.এম.