আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আফগানিস্তানে রাষ্ট্রপতি ভবনে নিজস্ব পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে নতুন প্রশাসনের শুরুর পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা ব্যবস্থা, নারী-পুরুষ লিঙ্গ ভিত্তিতে আলাদা করা হচ্ছে। একই সাথে চালু করা হবে নতুন ড্রেসকোড। রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) নতুন এই শিক্ষা নীতির ঘোষণা দেয় দেশটি।
দেশটির উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী আব্দুল বাকী হাক্কানী জানান, নারীরা পড়াশোনার অনুমতি পাবে, তবে তা পুরুষের সাথে সহশিক্ষা নয়। এছাড়া নারীদের যে বিষয়গুলো পড়ানো হবে তা পর্যালোচনা করে নির্ধারণ করা হবে।
তারা বলছে, নারী শিক্ষা এবং নারীদের চাকরী করায় বাধা দেবে না তারা। যদিও ১৫ আগস্ট দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর জনস্বাস্থ্য বিভাগ ছাড়া দেশের অন্য সব সেক্টরের নারীদের কাজে আসতে নিষেধ করেছে তারা। বলা হয়েছে, নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নয়ন না হওয়া পর্যন্ত কাজ থেকে দূরে থাকতে।
অথচ বিদ্রোহী ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারী-পুরুষ পাশাপাশি বসে পড়াশোনা করেছে এবং নারীদের জন্য নির্দিষ্ট কোন পোশাকের বাধ্যবাধকতাও ছিল না।
হঠাৎ এই পরিবর্তন আনাতে খুব একটা সমস্যা হবে না বলে মনে করছেন উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ হাক্কানী। তিনি বলেন, আফগানিস্তানের জনগণ মুসলিম, তাই এই নীতি সহজেই গ্রহণ করবে। এঅবস্থায় অনেকে বলেছেন, নতুন নিয়মে নারীরা শিক্ষা থেকে পিছিয়ে পড়বে, শুধু তাই নয় বঞ্চিতও হবে পারে।
কারণ, নারীদের আলাদা শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য অবকাঠামো থেকে শুরু করে আর যা কিছু পরিবর্তন প্রয়োজন তার জন্য পর্যাপ্ত আর্থিক বরাদ্দ দেয়ার ক্ষমতা নেই আফগানিস্তানের। তারপরেও হাক্কানী জোর দিয়ে বলেন যে, নারী শিক্ষা ব্যবস্থা আলাদা করার জন্য পর্যাপ্ত নারী শিক্ষকসহ সব সুযোগই আছে এবং যেখানে ঘাঠতি থাকবে সেখানে বিকল্প ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি বলেন, এটি পুরোটাই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্ষমতা এবং সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে। একজন পুরুষ শিক্ষকও পর্দাল আড়ালে থেকে নারীদের শিক্ষা দিতে পারে অথবা প্রযুক্তির মাধ্যমেও এটি সম্ভব। তবে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে নারী-পুরুষ পুরোটাই আলাদা করা হবে, যা একসময় আফগানিস্তানে প্রচলিত ছিলো। এছাড়া নারীদের হিজাব পরতে হবে, তবে তা পুরো মুখ ঢেকে কি না এ বিষয়ে স্পষ্ট করেননি হাক্কানী।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আগের দফায় তালেবানের শাসনামলে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ ছিলো নারীশিক্ষা।
সূত্র: বিবিসি
সান নিউজ/এমকেএইচ