আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিয়ানমারে বিতর্কিত বৌদ্ধ সন্ন্যাসী অশিন উরাথুকে মুক্তি দিয়েছে সামরিক জান্তা সরকার। তার বিরুদ্ধে বেসামরিক সরকারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছিল।
সোমবার সামরিক সরকার জানায়, অশিন উরাথুর বিরুদ্ধে সব অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, তিনি একটি সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার শরীরের অবস্থা কেমন তা এখনও জানা যায়নি।
এর আগে ঘৃণা ছড়ানোর অভিযোগে অশিন উরাথুর ২৫ বছর জেল হয়েছিল। মিয়ানমারের সামরিক সরকার তাকে জেলে ঢুকিয়েছিল। মাত্র ৭ বছর জেল খাটার পর সূচি ক্ষমতায় এসে তাকে মুক্ত করেন। কারণ তিনি তখন সূচির কাছের মানুষ ছিলেন বলে গুঞ্জন আছে।
অশিন উরাথু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সব সময় সোচ্চার। রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদ করার জন্য পেছনের কলকাঠি মূলত তিনিই নেড়েছেন। এমনকি নিজেকে ‘বৌদ্ধ লাদেন’ বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি।
টাইম ম্যাগাজিন ২০১৩ সালের জুলাই সংখ্যার প্রচ্ছদ করে তাকে নিয়ে। শিরোনাম ছিল ‘দ্য ফেস অব বুদ্ধিস্ট টেরর’ অর্থাৎ একজন বৌদ্ধ সন্ত্রাসীর মুখ। ২০১৯ সালে তার বিরুদ্ধে বেসামরিক সরকারের বিরুদ্ধে ‘ঘৃণা ও অবমাননা’ উস্কে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল। এরপর উরাথু পালিয়ে যান। গত বছরের নভেম্বরে তিনি আত্মসমর্পণ করেন। তারপর থেকে বিচারের অপেক্ষায় কারাবন্দী ছিলেন।
তৎকালীন নেতা অং সান সু চি এবং তার ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি সরকারের সমালোচনা করে সামরিকপন্থী সমাবেশে বক্তৃতাও দিয়েছিলেন তিনি। তিনি ৯৬৯ সালের আন্দোলনের অন্যতম প্রধান মুখ ছিলেন। ৯৬৯ একটি বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন যা বৌদ্ধদের তাদের নিজস্ব ধর্মের মধ্যে কেনাকাটা, সম্পত্তি বিক্রি এবং বিয়ে করার আহ্বান জানায়।
২০১২ সালে রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা এবং বৌদ্ধদের মধ্যে মারাত্মক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর তিনি বক্তৃতা দিয়ে জনসাধারণের দৃষ্টিতে আসেন। পরে ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সর্বোচ্চ বৌদ্ধ কর্তৃপক্ষ এক বছরের জন্য তার প্রচারণা নিষিদ্ধ করে। ঘৃণা ছড়ানোর অভিযোগে ২০১৮ সালে ফেসবুক তার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছিল।
সান নিউজ/এমকেএইচ