আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গত সপ্তাহে আফগান বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে সশস্ত্র বাহিনীর হাতে। এর ফলে আফগানিস্তানে ২০ বছর ধরে চলা যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করেছে দেশটির সশস্ত্র বাহিনী।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার পরপরই সশস্ত্র বাহিনী দেশ দখলের পাঁয়তারা শুরু করে।
মাত্র সাড়ে তিন মাসের মাথায় গত রোববার কাবুল নিয়ন্ত্রণে নেয় তারা। দেশটির সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বড় বড় ভবনে শোভা পাচ্ছে সশস্ত্র বাহিনীর সাদা নিশান। বিজয় ঘোষণার পরপর উল্লাস করতেও দেখা গেছে সশস্ত্র বাহিনীর যোদ্ধাদের।
এখন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির অপেক্ষায় তারা। এমন পরিস্থিতিতে বাদ পড়ছে না সশস্ত্র বাহিনী বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র আর সামরিক সরঞ্জাম পরিত্যক্ত হিসেবে পাওয়ার খবরও।
তাদের দখলে এখন শত শত কোটি মার্কিন ডলারের সামরিক সব যন্ত্রপাতি। এসব অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামের মধ্যে ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার থেকে শুরু করে এ-২৯ সুপার বিমানও রয়েছে।
সশস্ত্র বাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করার পর তাদের হাতে বহুল ব্যবহৃত একে-৪৭ রাইফেলের পরিবর্তে মার্কিন নির্মিত এম-৪ কারবাইন, এম-১৬ রাইফেলও দেখা গেছে।
এছাড়া, তালেবান যোদ্ধাদেরকে মার্কিন হামভি ও মাইন প্রতিরোধক অ্যাম্বুশ প্রটেক্টেড গাড়িতে দেখা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, তারা আফগান নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও অস্ত্রসজ্জিত করতে গত ২০ বছরে আট হাজার কোটি ডলার খরচ করেছে। কিন্তু তাদের এ প্রশিক্ষণ ও অস্ত্রপাতি তালেবানের হামলার ঠেকাতে পারেনি বরং মার্কিন সেনাদের কাছে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্য সশস্ত্র বাহিনী যোগ দিয়েছে।
মার্কিন পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৭ সালের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানকে ৭৫ হাজার ৮৯৮টি গাড়ি, পাঁচ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯০ টি অস্ত্র, এক লাখ ৬২ হাজার ৬৪৩টি যোগাযোগ সরঞ্জাম, ২০৮টি বিমান ও হেলিকপ্টার এবং ১৬ হাজার ১৯১টি নজরদারি সরঞ্জাম দেয়।
এছাড়া, ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানকে সাত হাজার ৩৫টি মেশিনগান, চার হাজার ৭০২টি হামভি গাড়ি, ২০ হাজার ৪০টি হ্যান্ড গ্রেনেড, দুই হাজার ৫২০টি বোমা ও এক হাজার ৩৯৪টি গ্রেনেড লাঞ্চার দেয় ওয়াশিংটন।
তবে আফগানিস্তানকে দেওয়া বিমান ও হেলিকপ্টারগুলোর ৪৬টি এখন উজবেকিস্তানে রয়েছে। এসব এয়ারক্র্যাফট ব্যবহার করে দেশটির প্রায় পাঁচশো সেনা উজবেকিস্তানে পালিয়ে যান। বিশ্লেষকরা বলছেন, সশস্ত্র বাহিনী হাতে মার্কিন অস্ত্র থাকার অর্থ হচ্ছে মনস্তাত্ত্বিকভাবে তারা বিজয়ী।
সূত্র: স্কাই নিউজ, পার্সটুডে
সাননিউজ/এএসএম