সাননিউজ ডেস্ক: মার্কিন সেনারা আফগানিস্তান ছাড়ার পরই বদলে গেল সব। রাতারাতি দেশ দখল, দেশের নাম পরিবর্তন, নতুন মন্ত্রিসভা সবই করে ফেললো তালেবান। আফগানিস্তান নতুন নাম নিয়েছে ‘ইসলামিক আমিরাত অফ আফগানিস্তান’। গঠিত নতুন মন্ত্রিসভার শীর্ষ সদস্যদের নামও প্রকাশ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে এমনটাই জানা গেছে।
প্রেসিডেন্ট
মোল্লা আব্দুল গণি বেরাদার। তালেবানের অন্যতম সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা আবদুল গনি বরদার। তিনি এখন দলটির রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান। কাতারের দোহায় শান্তি আলোচনায় অংশ নেন তিনি। আফগানিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন তিনি।
বেরদার মোল্লা ওমরের সবচেয়ে বিশ্বস্ত কমান্ডারদের একজন বলে জানা গেছে। ২০১০ সালে পাকিস্তানের করাচি শহরে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন তিনি। ২০১৮ সালে মুক্তি পান।
ভাইস প্রেসিডেন্ট
মোল্লা মোহাম্মদ ইয়াকুব। তালেবান প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ছেলে ইয়াকুব। তিনি দলের সামরিক অভিযানের তদারকি করেন। স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়াকুব আফগানিস্তানে আছেন। উত্তরাধিকার সূত্রে বিভিন্ন আন্দোলনের সার্বিক নেতা হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছিল তাকে। কিন্তু তিনি আখুনজাদাকে সামনে রেখেছিলেন। কারণ তিনি মনে করেছিলেন তার বয়স কম এবং যুদ্ধক্ষেত্রে তার অভিজ্ঞতার অভাব রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী
মোল্লা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদাহ। বিশ্বস্ত নেতা হিসাবে পরিচিত হায়বাতুল্লাহ আখুনজাদা। তিনি ইসলামি আইনের পণ্ডিত। তালেবানের রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সামরিক বিষয়ে চূড়ান্ত কর্তৃত্ব রাখেন এই নেতা। ২০১৬ সালে তৎকালীন নেতা মোল্লা মানসুর আখতার যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় নিহত হওয়ার পর নেতৃত্বে আসেন আখুন্দজাদা। আনুমানিক ৬০ বছর বয়স তার।
আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা
শের মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই। তালেবান সরকারের একজন সাবেক উপমন্ত্রী। অপসারণের আগে তিনি প্রায় এক দশক ধরে দোহায় বসবাস করেছেন। ২০১৫ সালে তালেবানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান হয়েছিলেন। তিনি আফগানিস্তান সরকারের সাথে আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। প্রতিনিধিত্ব করেছেন বেশ কয়েকটি দেশে কূটনৈতিক ভ্রমণে।
অর্থমন্ত্রী
মোল্লা সিরাজুদ্দিন হাক্কানি। বিশিষ্ট মুজাহিদিন কমান্ডার জালালুদ্দীন হাক্কানীর ছেলে সিরাজউদ্দিন। তিনি তালেবান নেটওয়ার্কের নেতৃত্ব দেন। পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে তালেবানের আর্থিক ও সামরিক সম্পদের তদারকি করেন সিরাজউদ্দিন। তবে তার অবস্থান অজানা। হাক্কানির বয়স ৪০ বা ৫০ বছর।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মোহাম্মদ সোহেল শাহীন। তালেবানের মুখপাত্র, বিভিন্ন আলোচনায় তালেবানের প্রতিনিধিত্বকারী। এছাড়া আব্দুল হাকিম হাক্কানির নামও মন্ত্রী পরিষদে কোন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদের জন্য শোনা যাচ্ছে। তালেবানের আলোচক দলের প্রধান আব্দুল হাকিম হাক্কানি। তিনি তালেবানের সাবেক ছায়া প্রধান বিচারপতি। ধারণা করা হয়, আখুনজাদা তাকে সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করেন।
২০ বছর আগে তালেবান সরকার দেশের নাম দিয়েছিল ‘ইসলামিক আমিরাত অফ আফগানিস্তান’। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে টুইন টাওয়ারে হামলার পর ‘তালেবান সরকারকে’ উৎখাত করে আমেরিকা নেতৃত্বাধীন বাহিনী। তখন নামটি বিলুপ্ত হয়। আবারও আফগানিস্তানের ক্ষমতায় বসার দ্বারপ্রান্তে তালেবান। তারা নতুন করে পুরনো নামটি সামনে আনলো।
তালেবান ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। কাবুলের পতনের পর দেশের নিয়ন্ত্রণ নিতে তালেবানের অন্তত ৯০ দিন লাগবে বলে অনুমান করেছিল মার্কিন গোয়েন্দারা। কিন্তু দুই সপ্তাহেরও কম সময়ে কাজটি করল তালেবান।
সাননিউজ/এমএম/এমআর