আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মার্কিন সেনাসহ সকল বিদেশি সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়ার মধ্যেই অবিশ্বাস্য দ্রুততায় পুরো আফগানিস্তানের দখল নিয়েছে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবান। দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনিসহ মন্ত্রিপরিষদের অনেক সদস্য।
রোববার (১৫ আগস্ট) আফগানিস্তান ইস্যুতে সামরিক, কূটনৈতিক ও গোয়েন্দা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে অনলাইন কনফারেন্সে অংশ নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন
মার্কিন বাহিনীসহ বিদেশি সেনারা তাদের নিজ নিজ নাগরিকদের সরিয়ে নিতে ব্যস্ত। ওই পুরোটা সময়জুড়ে এই বিষয়গুলোই ছিল সারা বিশ্বে আলোচনার কেন্দ্রে।
রোববার তালেবান কাবুল দখল করলেও গোষ্ঠীটির যোদ্ধারা তীব্র আক্রমণ শুরু করে গত ৬ আগস্ট থেকে। ৬ আগস্ট থেকে ১৫ আগস্ট; এই দশ দিনে তালেবান যোদ্ধারা কার্যত ৩৪টি আফগান প্রদেশের মধ্যে ২৯টি দখল করে নেয়।
রোববার সকালের পর থেকে কাবুলের সীমানায় এবং পরে ধীরে ধীরে দেশটির রাজধানীতে প্রবেশ শুরু করে তারা। আর এতেই বিস্মিত খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার প্রশাসন।
সোমবার (১৬ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা এপি জানিয়েছে, তীব্র আক্রমণ চালিয়ে সমগ্র দেশ দখল ও ক্ষমতার কেন্দ্রে চলে আসতে তালেবানের গতি দেখে রোববার স্তব্ধ হয়ে যান স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় মার্কিন কর্মকর্তারা।
মার্কিন সামরিক বাহিনী তথা যুক্তরাষ্ট্রের কমান্ডার ইন চিফ হিসেবে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জন্য আফগান সরকার ভেঙে পড়ার এই বিষয়টিকে সবচেয়ে মারাত্মক পরীক্ষা বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
এমনিতেই আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার ও চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বিরোধী রিপাবলিকানদের তীব্র সমালোচানার শিকার হতে হচ্ছে ডেমোক্র্যাটিক এই প্রেসিডেন্টকে।
আফগান সেনাবাহিনীকে গড়ে তুলতে যুক্তরাষ্ট্র বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। কিন্তু তারপরও প্রশিক্ষণহীন তালেবান যোদ্ধাদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি তারা। তালেবান যোদ্ধাদের সামনে আফগান বাহিনীর আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র ও প্রশিক্ষণও কোনো কাজেই আসেনি।
আফগান সামরিক বাহিনীকে ইঙ্গিত করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন’কে বলেন, ‘আফগান বাহিনী (তালেবান যোদ্ধাদের কাছ থেকে) তাদের দেশকে রক্ষাই করতে পারল না। আর এটা আমাদের অনুমানের চেয়েও দ্রুতগতিতে ঘটেছে।’
হোয়াইট হাউসের একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এপি জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রোববার সারাদিন ক্যাম্প ডেভিডেই অবস্থান করছিলেন। সেখান থেকে কিছুক্ষণ পরপরই আফগানিস্তান ইস্যুতে নিয়মিত খোঁজখবর নেন তিনি। এছাড়া আফগান ইস্যুতে নিজের জাতীয় নিরাপত্তা টিমের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কয়েকবার কথাও বলেছেন বাইডেন।
সাননিউজ/এএসএম