আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাজধানী কাবুলের প্রেসিডেন্ট প্যালেসসহ সব সরকারি সদরদপ্তরের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে তালেবান। আফগানিস্তান ছেড়ে প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি পালিয়ে যাওয়ার পরই দ্রুত পাল্টে যায় দৃশ্যপট। আড়াই দশক আগে মোল্লা ওমরের নেতৃত্বে আফগানিস্তানের ক্ষমতা নিয়েছিল তালেবান।
কিন্তু বিদেশি সেনাদের আক্রমণে পাঁচ বছরের মধ্যে ক্ষমতা হারাতে হলেও নতুন নেতৃত্বের অধীনে দুই দশক পর আবার দেশটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিল তারা। এরই মধ্যে নতুন মন্ত্রিসভাও গঠন করেছে তারা! ঘোষণা আসতে পারে যে কোন সময়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে এমনটাই জানা গেছে।
প্রেসিডেন্ট:
মোল্লা আব্দুল গণি বেরাদার। তালেবানের অন্যতম সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা আবদুল গনি বরদার। তিনি এখন দলটির রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান। কাতারের দোহায় শান্তি আলোচনায় অংশ নেন তিনি। আফগানিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন তিনি।
বেরদার মোল্লা ওমরের সবচেয়ে বিশ্বস্ত কমান্ডারদের একজন বলে জানা গেছে। ২০১০ সালে পাকিস্তানের করাচি শহরে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন তিনি। ২০১৮ সালে মুক্তি পান।
ভাইস প্রেসিডেন্ট:
মোল্লা মোহাম্মদ ইয়াকুব। তালেবান প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ছেলে ইয়াকুব। তিনি দলের সামরিক অভিযানের তদারকি করেন। স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়াকুব আফগানিস্তানে আছেন। উত্তরাধিকার সূত্রে বিভিন্ন আন্দোলনের সার্বিক নেতা হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছিল তাকে। কিন্তু তিনি আখুনজাদাকে সামনে রেখেছিলেন। কারণ তিনি মনে করেছিলেন তার বয়স কম এবং যুদ্ধক্ষেত্রে তার অভিজ্ঞতার অভাব রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী:
মোল্লা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদাহ। বিশ্বস্ত নেতা হিসাবে পরিচিত হায়বাতুল্লাহ আখুনজাদা। তিনি ইসলামি আইনের পণ্ডিত। তালেবানের রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সামরিক বিষয়ে চূড়ান্ত কর্তৃত্ব রাখেন এই নেতা। ২০১৬ সালে তৎকালীন নেতা মোল্লা মানসুর আখতার যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় নিহত হওয়ার পর নেতৃত্বে আসেন আখুন্দজাদা। আনুমানিক ৬০ বছর বয়স তার।
আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা:
শের মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই। তালেবান সরকারের একজন সাবেক উপমন্ত্রী। অপসারণের আগে তিনি প্রায় এক দশক ধরে দোহায় বসবাস করেছেন। ২০১৫ সালে তালেবানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান হয়েছিলেন। তিনি আফগানিস্তান সরকারের সাথে আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। প্রতিনিধিত্ব করেছেন বেশ কয়েকটি দেশে কূটনৈতিক ভ্রমণে।
অর্থমন্ত্রী:
মোল্লা সিরাজুদ্দিন হাক্কানি। বিশিষ্ট মুজাহিদিন কমান্ডার জালালুদ্দীন হাক্কানীর ছেলে সিরাজউদ্দিন। তিনি তালেবান নেটওয়ার্কের নেতৃত্ব দেন। পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে তালেবানের আর্থিক ও সামরিক সম্পদের তদারকি করেন সিরাজউদ্দিন। তবে তার অবস্থান অজানা। হাক্কানির বয়স ৪০ বা ৫০ বছর।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী:
মোহাম্মদ সোহেল শাহীন। তালেবানের মুখপাত্র, বিভিন্ন আলোচনায় তালেবানের প্রতিনিধিত্বকারী। এছাড়া আব্দুল হাকিম হাক্কানির নামও মন্ত্রী পরিষদে কোন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদের জন্য শোনা যাচ্ছে। তালেবানের আলোচক দলের প্রধান আব্দুল হাকিম হাক্কানি। তিনি তালেবানের সাবেক ছায়া প্রধান বিচারপতি। ধারণা করা হয়, আখুনজাদা তাকে সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করেন।
রয়টার্স জানিয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন কোনো সরকার নয়, তালেবান সরকারই দেশটির ক্ষমতা বুঝে নেবে। আর এর মধ্য দিয়ে আফগান সরকারের পরাজয় নিশ্চিত হয়ে গেল। এদিকে তালেবানের প্রবেশে আতঙ্কের নগরীতে পরিণত হয়েছে কাবুল। দূতাবাস খালি করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো।
সান নিউজ/এমএম